Archive for the ‘রাজনীতি’ Category

Photo: Bigstock

Although Prime Minister Sheikh Hasina maintains that the press in Bangladesh has enough freedom, the reality tells a different story.

For journalists in Bangladesh, the recent years have been difficult and, in some cases, life-threatening. However, 2016 was worse for the freedom of press in the country than the previous years, despite being less eventful in terms of deaths or severe injuries.

According to the 2017 Press Freedom Index, published by Paris-based international organisation Reporters without Borders, Bangladesh is ranked at No 146 among 180 countries around the world – two ranks down from 2016’s No 144 and the same rank as 2015.

“The Bangladeshi government does not take kindly to criticism of its constitution or its state religion, Islam. In 2016, the government took a tougher line towards its critics and the media in general. This was made clear by official statements expressing hostility towards the media, the blocking of dozens of websites, and the many lawsuits brought against journalists by Prime Minister Sheikh Hasina’s Awami League,” says the Reporters without Borders website.

According to an Amnesty International report published on April 28, in late 2016 and early 2017, many bloggers and freelance writers in Bangladesh have received death threats several times, but they are either reluctant to approach police for protection or say they have been refused assistance when they have done so.

Below is a list of major incidents of harassment, assault, police cases and a murder of journalists around the country last year:

– On May 1, 2017, online news portal Natun Somoy Executive Editor Ahmed Razu was arrested in a defamation case filed by the Walton Group. Razu is a formal employee of Walton-owned newspaper Rising BD. He is currently in jail.

– On April 8, 2017, Daily Observer Sylhet Correspondent Sardar Abbas and Dainik Sakaler Khobor Correspondent Syed Nabiul Alam Dipu were assaulted by Chhatra League members when they protested sexual harassment.

– On March 13, 2017, police in plainclothes picked up Daily Telegram Editor Binoy Krishna Mallik from his home for holding a press conference to allegedly expose the corruption of local superintendent of police. Police initially denied having arrested him, but later released him in face of protest.

– On March 7, 2017, Rabiul Islam, reporter of Barisal-based newspaper Somoyer Barta, was arrested for reporting on the suicide of a sub-inspector’s wife. The sub-inspector, Nurul Amin, filed the case with a local court. Rabiul is currently out on bail.

– On February 6, 2017, miscreants attacked Samajer Kotha Correspondent Abdur Razzak Razu and his wife in Ramnagar area in Paikgachha, Khulna. Razu was severely injured.

– On February 3, 2017, Shahbagh police assaulted Daily Ittefaq photojournalist Jibon Ahmed in front of Amar Ekushey Book Fair’s Suharawardy Udyan gate over parking dispute.

– On February 2, 2017, Daily Samakal upazila correspondent Abdul Hakim Shimul was fatally shot by Sirajganj’s Shahjadpur municipality Mayor Halimul Haque Miru during a clash between two factions of local Awami League unit. Shimul succumbed to his injuries the next day.

– On January 26, 2017, ATN News Reporter Kazi Ehsan Bin Didar and Cameraperson Abdul Alim were assaulted by Shahbagh police while recording videos of people getting detained by police from an Anti-Rampal procession. The same day, Dhaka Tribune journalist Morshed Jahan Mithun was assaulted by police in Mirpur.

– On December 23, 2016, Ekushey Television’s Savar Correspondent Nazmul Huda was detained by police for “fomenting unrest” during a protest by RMG factory employees. Nazmul, also local correspondent of the Bangladesh Pratidin, was later made accused in five other cases, including one for stealing trousers. He is currently out on bail.

– On December 7, 2016, four journalists were physically assaulted by members of Oikkoboddho Sonaton Samaj Bangladesh when they protested vandalism at Chittagong Press Club. The same day, three correspondents were physically assaulted by Bangladesh Chhatra League members on Chittagong University campus.

– On November 14, 2016, Daily Samakal and Channel 24’s Habiganj Correspondent Shoyeb Chowdhury was arrested under the ICT Act. He was released after two and a half months in prison.

– On October, 12, 2016, a sports reporter and a cameraperson of GTV were assaulted by a group of youths led by the son of an assistant commissioner of Chittagong Metropolitan Police.

– Istishon blog founder and prominent writer Nur Nobi Dulal left the country with his family for Europe in 2016 after receiving several death threats from militants. Shortly after he left, the government blocked Istishon blog in Bangladesh on September 26.

– On September 1, 2016, Online education portal Dainikshiksha.com Editor Siddiqur Rahman was arrested under Section 57 of the ICT Act for publishing a news on corruption involving Prof Fahima Khatun, former director general of higher and secondary education. He is currently out on bail.

– On August 8, 2016, RAB arrested online news portal Banglamail24.com acting editor Shahadat Ullah Khan, Executive Editor Maksudul Haider Chowdhury and Assistant Editor Pantho Polash on charge of running a false report on Sajeeb Wazed Joy, Prime Minister Sheikh Hasina’s ICT adviser and son. They are currently out on bail.

– On July 21, 2016, Prothom Alo photojournalist Anis Mahmud and four others were assaulted by jail guards at Sylhet Central Jail while on duty.

– On June 25, 2016, a reporter was harassed by Chhatra League members on Chittagong University campus.

– On June 19, 2016, a Channel i cameraperson was injured during a clash between two groups of Chhatra League inside the Chittagong College premises.

– On June 12, 2016, Rajshahi district Awami League leader Asaduzzaman Asad filed a case against Daily Samakal Editor Golam Sarwar and three other journalists of the newspaper for naming local Awami League leader Abdus Salam as a JMB member in a news report.

– On April 10, 2016, a group of local goons attacked two journalists of Deepto TV in Chittagong’s Bahaddarhat area.

– On February 2, 2016, a photojournalist of the Daily Prothom Alo was beaten by Chhatra League men in Chittagong while on duty.

– In 2016, Rangpur’s Pirgachha police OC Makbul Hossain and Sub-Inspector Rafiqul Islam filed three cases against Daily Jugantor Pirgachha Correspondent Harunur Rashid on charge of committing subversive acts and carrying explosives because he exposed these two officials for extorting money from people.

– Journalists Shafik Rehman, Shaukat Mahmood and Mahmudur Rahman were arrested between 2015 and 2016. Several charges were brought against them. The trio claimed that they were arrested because they were involved with the BNP. All three are currently out on bail.

 

Written by: Tarek Mahmud

Published in DhakaTribune, May 03, 2017

Author

লিখেছেন: অজয় দাশগুপ্ত

 

বদলে যাচ্ছে দেশ, বদলে গেছে রাজনীতি। আগে রাজনীতির কথা বলি। তার বদলানো আসলেই কি নতুন কিছু?

দেশ স্বাধীনের পর পর আমরা হোঁচট খেয়েছিলাম ভুট্টোর আগমনে। জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকায় আসতেই পারেন। একবার যুদ্ধ হলেই কোনো দেশ চিরকালের দুশমন হয়ে যায়, তেমন না-ও হতে পারে। তবে পাকিস্তানের ব্যাপারে সেটা ঠিক নয়। তারা এখন অবধি আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়ের মতো সেদেশে একজনকেও খুঁজে পাওয়া যায় না যার প্রগতিবাদের প্রতি কমিটমেন্ট সবসময় একধরনের।

এই লেখা যখন লিখছি, দেখলাম, হামিদ মীর নাকি তার পিতাকে দেওয়া বর্তমান সরকারের সম্মাননা ফেরত দেবেন। বুঝুন এবার। হতে পারে এই সম্মাননার কারণে তিনি তার দেশে নিরাপদে বেঁচে থাকতে পারবেন না। আবার এ-ও হতে পারে এখন তার মনে হচ্ছে বাংলাদেশিদের দেওয়া সম্মাননা ‘না-জায়েজ’। এই হল পাকিস্তান।

বলছিলাম ভুট্টো সাহেবের কথা। দেশ মুক্ত হওয়ার পরপর ঢাকায় আসা এই বাংলাদেশবিরোধী পাকিস্তানির জন্য দরদ উথলে উঠেছিল কিছু মানুষের। রাজপথে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না আর মনে মনে দোয়া দিয়ে পথ ভাসানো পাকিদরদীরা আসলে তখন থেকেই সক্রিয়।

সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে এরা সুবিধা করতে না পারলেও আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করিনি। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের সময়ের সেক্যুলার সরকারপ্রধান তাজউদ্দীনকে অবহেলা করেছিল নির্মমভাবে। তাঁর প্রজ্ঞা-মেধা-দূরদর্শিতা ব্যবহার করতে পারলে হয়তো অনেক বিপদ এড়ানো সম্ভব হত।

এর ফাঁকে বেড়ে ওঠা পাকিদরদী চক্র মোশতাকের হাত ধরে প্রথম সামনে এলেও আওয়ামী লীগ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে জিয়াউর রহমানকে যত বড় শত্রু মনে করে, মোশতাককে হয়তো তত বড় দুশমন মনে করে না। অথবা দলের কলঙ্ক বলে তাকে এড়িয়ে চলে। কিন্তু বাস্তবতা এই খন্দকার মোশতাকই বঙ্গবন্ধুর রক্তের ওপর সরকার গঠন করে খুনিদের ‘সূর্যসন্তান’ ডেকেছিল। সেই থেকে রাখঢাকের রাজনীতিতে ঢুকে পড়া আওয়ামী লীগও এখন পরিবর্তনের শিকার।

এদেশের মানুষের মন বোঝা কঠিন কিছু না। আসলে আমরা বলতে চাই না। কারণ বললে আমরা ছোট হয়ে যাই। জিয়াউর রহমানের স্বল্পকালীন শাসন কি এত প্রতাপ আর সাহস রাখে যে দেশ পাল্টে দিতে পারে? মূলত মানুষের মনে মনে ‘পাকিস্তান প্রেম’ আগে থেকেই বাসা বাঁধতে শুরু করেছিল। তারা সুযোগের সন্ধানে ছিল মাত্র।

সেই সময় থেকে আজ অবধি আওয়ামী লীগের সমর্থন কমে-বাড়ে, কিন্তু বিএনপির কমে না। কারণ বিএনপি জামায়াতও না, আবার বামও না। দেশের মধ্যবিত্তের মনে মুসলিম মনোভাব প্রবল বলে তারা বাঙালি হতে দ্বিধান্বিত। অথচ বাঙালি না হলে পহেলা বৈশাখে যাওয়া যায় না। শহীদ মিনারে যাওয়া যায় না। শোভাযাত্রায় সামিল হওয়া যায় না।

জামায়াতের আদর্শ ভালো লাগলেও তারা কট্টর জীবনযাপন মানতে পারেন না। তাদের চাই জিন্নাহ সাহেবের মতো জীবন। ধর্মের নামে রাজনীতি ও সমাজকে বশে রেখে নিজে পানাহার করতে হবে। স্যুট-কোট-টাই পরা ছাড়বে না। নিজেরা দিল্লি যাবে। ভারতে শপিং করবে, ডাক্তার দেখাবে, কিন্তু জনগণকে করা হবে মৌলবাদী ও ইসলামাবাদমুখী।

জিয়াউর রহমানের আমলে কর্নেল ওসমানী হেরেছিলেন ভোটে। মানুষ মুক্তিযুদ্ধের সিপাহসালারকে সেভাবে মূল্যায়ন করেনি। কেন করেনি? কারণ তারা তখন থেকেই বদলে যাচ্ছিল। বদলে না গেলে হাফেজ্জি হুজুর কীভাবে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন মানুষের ভোটে? শাহ আজিজ কি কেবল কারো দয়ায় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন? মানুষ তাকে নেয়নি? বদলে যাওয়া বাংলাদেশে মাওলানা মান্নান থেকে নিজামী বা হেফাজতের হুজুর সবাই জায়েজ।

এই রাজনীতির ফল এতদিন বিএনপি একা খেলেও এখন আর তা হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ বুঝে গেছে তারা আসলে ‘মাইনরিটি’। ভোটের অংকে তারা ৪০ ভাগও না। বাকি ৬০ ভাগ আওয়ামীবিরোধী। এই সমীকরণে পাওয়ারে থাকতে হলে সমঝোতার বিকল্প আছে?

নিন্দুকের বলে মোটা অংকের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় নাকি হেফাজতের একাংশ আওয়ামীমুখী। আবার এ-ও বলা হয় হেফাজত এই সরকারের আমলেই জামায়াতের বিকল্প হতে চায়। হতে চাওয়াটা অন্যায়ের কিছু নয়। কিন্তু আপত্তি থাকে তাদের মত ও পথের বিবেচনায়। যে ১৩ দফা তাদের, আদর্শ কি আছে সেখানে? ভালো করে দেখুন– ১৩ দফা জামাতের চেয়েও ভয়াবহ। অথচ তারা এখন দেশের সমঝোতার রাজনীতিতে চমৎকার জায়গায়। কথা হচ্ছে এই সমঝোতা কি আওয়ামী লীগকে আসলে নিরাপদে রাখবে?

মনে পড়ছে সেই ভয়াবহ দিনরাতের কথা। হেফাজতের শাপলা সমাবেশ নিয়ে কিছু মিডিয়ার মাতম। অাজ যিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সেই এরশাদ সাহেব পানি পান করানোর দায়িত্ব নিয়ে গুনাহ মওকুফের পাশাপাশি সরকার পতনে সমর্থন দিয়েছিলেন। বিএনপি তো মানুষকে ঘর থেকে বেরুনোর ডাক দিয়ে দিয়েছিল। সেই রাতে নিরাপত্তা বাহিনী অার প্রধানমন্ত্রীর সাহস একত্রিত না হলে কী হত, বলা মুশকিল। এর পরপর তখনকার অাওয়ামী শপথ অার অাজ ভাস্কর্য সরানোর সমঝোতার সমীকরণ মেলে না। বরং কেন জানি মনে হয়:

“তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে।”

এটা নিশ্চিত দেশের বেশিরভাগ মানুষের মন বুঝে আওয়ামী লীগ মত বদলেছে। তবে এটা মনে রাখা দরকার বাজারে দুধ থাকলে তার ভক্তেরা ঘোল গিলবে না। জামায়াত-বিএনপি-হেফাজত একাকার হলে মিলে যায়। অাওয়ামী লীগ সেখানে ‘মিসফিট’।

তবে এটা বুঝতে পারছি কৌশলে বাগে রাখার রাজনীতি চলছে। দড়ি শিথিল হলে বা শেখ হাসিনা গেলেই গণভোটের মতো কিছু একটা হয়ে পতাকা যাবে। জাতীয় সঙ্গীত ‘হারাম’ হবে! দেশের নাম কী হবে, কেউ বলতে পারে না! সে চক্রান্ত না রুখে অাপস মানে মুক্তিযুদ্ধকে বিপদে ফেলে দেওয়া। স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেওয়া দল যদি তা করে এদেশে বাম ডান কেউই নিরাপদ থাকবে না।

বেশ কয়েক বছর অাগে বহুল প্রচারিত ঘোর অাওয়ামীবিরোধী দৈনিকটি স্লোগান দিয়েছিল: ‘বদলে যাও, বদলে দাও।’

এখন অাওয়ামী লীগও তার শিকার। ‘অাওয়ামী মুসলিম লীগ’ থেকে ‘অাওয়ামী লীগ’এ রূপান্তরিত দল এখন অাবার উল্টো রথে। বদলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ভীত দেশ দেখছে, দেখছেন বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন ও প্রয়াতেরা।

সামনে কী অাছে কেউ জানে না। শুধু খোলস বদলালেই কি সমাজ বদলায়, না দেশ?

 

অজয় দাশগুপ্ত, কলামিস্ট। প্রকাশিত: বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম, ১ মে, ২০১৭

মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক গবেষক সালেক খোকন এর ধারাবাহিক সিরিজ

 

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০১ :  রাজাকার তো রাজাকারই থাকে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০২ :  নতুন প্রজন্ম সত্য জানতে চায়

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৩ : রাজাকারের শাস্তি হলে শান্তি পেতাম

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৪ :  পরের যুদ্ধটা ছিল আরও কঠিন

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৫ :  কাদের মোল্লার হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী আমি

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৬ :  বঙ্গবন্ধুর নাম তখন বলাই যেত না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৭ :  ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৮ :  আর দাঁড়াতে পারলাম না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৯ :  স্বাধীনতা দিবস হওয়া উচিত ছিল ৭ মার্চ

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১০ :  মৃত্যুর পর সম্মানের দরকার নেই

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১১ :  রাজাকারদের উত্থান দেখে ভাবিনি বিচার হবে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১২ :  শেখের মাইয়াই আমগো খেয়াল রাখে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৩ :  ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৪ :  মিথ্যা দিয়ে ইতিহাসের সত্য বদলানো যায় না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৫ :  মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিরক্ষার পরিবর্তে ধ্বংস করা হয়েছে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৬ :  শেখের বেটিই মুক্তিযোদ্ধাগো কষ্ট বুঝে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৭ :  আমি সেনাবাহিনীর ট্রেইন্ড যোদ্ধা, বসে থাকতে পারি না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৮ :  তাঁর ভালোবাসার সুযোগ নিয়াই ওরা তাঁরে খুন করসে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৯ :  পাকসেনাদের বিচার করা দরকার ছিল

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২০ :  বঙ্গবন্ধুর মেয়ে রাজাকারের সঙ্গে আঁতাত করতে পারে না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২১ :  দেশটা তো মায়ের মতো

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২২ :  দ্রুত এদের শাস্তি কার্যকর করা উচিত

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৩ :  রাজাকারের সর্বনিম্ন শাস্তি ফাঁসি

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৪ :  সেরা বুদ্ধিজীবীদের ওরা হত্যা করেছিল

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৫ :  সমন্বিত আক্রমণ অপারেশন জ্যাকপট

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৭ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৮ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৯ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩০ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩১ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩২ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৩ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৪ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৫ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৭ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৮ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৯ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪০ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪১ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪২ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৩ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৪ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৫ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৭ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৮ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৯ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫০ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫১ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫২ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৩ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৪ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৫ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৭ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৮ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৯ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬০ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬১ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬২ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৩ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৪ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৫ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৭ :  তেঁতুল হুজুররা সঙ্গে থাকলে কিন্তু সোনার বাংলা হইব না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৮ :

 

 

 

 

============================================================

সিরিজ লেখক: সালেক খোকন, গবেষক।

সিরিজ প্রকাশ শুরু হয়েছে ১৫ জুন, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ হতে, বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম-এ।

চম্পকনগর বাজারের পাশ দিয়েই চলে গেছে পূর্ব দিক বরাবর একটি পাকা রাস্তা। খানিক এগোতেই বদলে যেতে যায় আশপাশের দৃশ্য। লাল মাটির আঁকাবাঁকা পথ। মাটি আঁকড়ে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি কাঁঠাল গাছ। রাস্তার পাশের খেত পাকা ধানে ভরা; সোনালী রং লেগেছে তাতে, দমকা হাওয়ার ঝাপটায় মাঝেমধ্যেই তা নুয়ে পড়ছে জমির বুকে। পাখপাখালির কণ্ঠ ভেসে আসছে চারপাশ থেকে। এমন মনোহর দৃশ্যে বিভোর হয়ে একসময় আমরা পৌঁছে যাই গন্তব্যে।

গ্রামের নাম বিষ্ণুপুর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার এ গ্রামেই বসবাস করছেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক শহিদ উদ্দিন ভুইয়া। এ বীর মুক্তিযোদ্ধার কথা শুনি ঢাকায় বসবাসরত এ গ্রামেরই সন্তান সরকার জাবেদ ইকবালের মুখে। আগ্রহী হতে তিনিই আমাদের ঠিকানাটি দিয়ে সাহায্য করেন।

‘কমান্ডারের বাড়ি’ কোথায়?

প্রশ্ন শুনেই বিষ্ণুপুরের মধ্যবয়সী এক যুবক আগ্রহ নিয়ে দেখিয়ে দেন উত্তর পাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিনের বাড়ি। অতঃপর আমরা তাঁর মুখোমুখি হই।

ফোরকান উল্লাহ ভুইয়া ও মালেকান্নেছার পঞ্চম সন্তান শহিদ উদ্দিন ভুইয়া। লেখাপড়ায় তাঁর হাতেখড়ি বিষ্ণুপুর প্রাইমারি স্কুলে। অতঃপর ষষ্ঠ শ্রেণিতে তিনি ভর্তি হন মিরাশানি পলিটেকনিক একাডেমি হাই স্কুলে। ওখান থেকেই তিনি মেট্রিক পাস করেন ১৯৬৪ সালে।

শৈশব ও কৈশোরের নানা ঘটনাপ্রবাহ আজও উদ্দিপ্ত করে শহিদ উদ্দিনকে। স্মৃতি হাতড়ে তিনি জানালেন সেসব দিনের কথা।

“তহন ফুটবল খেলতাম। মেরাশানি হাই স্কুল টিমের গোলকিপার ছিলাম। বন্ধু আলিম, মন্নাফ, বশির উদ্দিন, আবুল কাশেমের কথা খুব মনে পড়ে। কাশেমের বাড়ি ছিল মুকুন্দপুর। একবার তার খুব অসুখ হয়। তহন এইটের ক্লাস মনিটর আমি। ক্লাস ভাইঙা একদিন ওরে দেখতে গেছিলাম। ফেরার পথে মুকুন্দপুর রেলস্টেশন থাইকা ট্রেন ধরি। আজমপুর স্টেশনে নামার সময় হ্যান্ডেলে ধইরা দৌঁড়াইয়া সামনের দিকে লাফ দিয়া নামি আমরা। কিন্তু মন্নাফ ডাইরেক্ট জাম্প দিয়াই চাকার নিচে পইরা যায়। আমি ওরে টাইনা তুলি। তা না হইলে ওইদিন ও মারা যাইত।

 

“আব্দুর রহমান, শহিদ উদ্দিন, মইজুদ্দিন স্যাররে খুব ভয় করতাম। তহন শিক্ষকরা এইট-নাইন পইরাই লেহাপড়া শিখাইছে। এহন ডিগ্রি পাস শিক্ষকরাও ভালো কইরা পড়াইতে পারে না। তহন শাসন ছিল কড়া। এহন তো শাসনের সিসটেমই নাই।

“আগে মানুষের মইধ্যে আন্তরিকতা ছিল। একের প্রতি অন্যের দরদও ছিল। এহন সেইডা লোপ পাইছে। সবাই খালি ‘ইয়ানফছি’, ‘ইয়ানফছি’ করে। তবে ভালো কিছু লোকের লাইগাই সমাজ টিকা থাকে। ভালো মানুষের সংখ্যাডাও তাই বাড়াইতে হইব।”

মেট্রিকের পরেই শহিদ উদ্দিনের ইচ্ছা কলেজে পড়ার। কিন্তু তাঁর বাবা চান সে ব্যবসা করুক। এ নিয়ে মনোমালিন্য হয়। ফলে একদিন না বলেই তিনি ঘর ছাড়েন, চলে যান কুমিল্লায়। সেখানে লোকমুখে জানতে পারেন আর্মিতে লোক নেওয়ার খবর। কৌতূহলী হয়ে যান কান্দিরপাড় রিক্রুটিং অফিসে। বাকি ইতিহাস শুনি শহিদ উদ্দিনের জবানিতে:

পাকিস্তান সেনাদের একটি গুলি মুক্তিযোদ্ধা শহিদের বুকের বাম পাশ দিয়ে ঢুকে লাং ফুটো করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়

“গিয়া দেহি দুই-তিনশ লোক লুঙ্গি কাছা দিয়া খালি গায়ে দাঁড়াইয়া আছে। অফিসের বারান্দায় আমি। কী হয় দেখতাছি। এমন সময় ক্যাপ্টেন সাব আসেন। আমারে দেইখা কন, ‘তুমি ভর্তি হইবা।’

আমি বললাম, ‘ভর্তি হইতে পারমু, স্যার।’

উত্তর শুইনা উনি আমারে শার্ট-প্যান্ট খুলতে বলেন। আমি তো শরমে মরছি। বলি, ‘স্যার, প্যান্টও খুলতে হইবো!’

কথা শুইনা তিনিও মুচকি হাসলেন। এরপর হাইট, ওয়েট আর বডি চেক কইরাই স্ট্যাম্পের কালিতে পেনসিল দিয়া বুকে নাম্বার লেইখা দিলেন। বাছাইয়ের পর দেওয়া হয় চিটাগাং ইবিআরসিতে। তের-সাত-উনিশশ চৌষট্টিতে জয়েন করছি সৈনিক পোস্টে। আর্মি নম্বর ১৩১৮৪৯৬।”

আগস্টের ৩১ তারিখে শহিদ উদ্দিনকে ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হয় পশ্চিম পাকিস্তানে, রিসালপুরে। এক বছর ট্রেনিং শেষে প্রথমে লাহোর ক্যান্টনমেন্টে এবং পরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় খ্যামকরন সেক্টরের ইঞ্জিনিয়ার কোরে। দায়িত্ব ছিল ব্রিজ ভাঙা, রাস্তাঘাট ভাঙা, মাইন লেইং অ্যান্ড লিফটিং, ওয়াটার সাপ্লাই প্রভৃতি। যুদ্ধবিরতির পর তাঁকে প্রথমে পোস্টিং দেওয়া হয় সোয়াদ গিলগেটে, ওয়ান ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটেলিয়ানে। অতঃপর তিনি কাজ করেন রাওয়ালপিন্ডিতে, ১০১ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটেলিয়ানে।

সত্তরের শেষের দিকে তিন মাসের ছুটিতে শহিদ আসেন দেশে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১। ছুটি শেষ হওয়ায় ওইদিনই তিনি রিপোর্ট করেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কুর্মিটোলা ট্রানজিট ক্যাম্পে।

দেশ তখন উত্তপ্ত, ব্যারাকের ভেতরে আপনারা কি দেখলেন?

শহিদ উদ্দিন বলেন:

“যহন পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলাম নির্বাচনে তহন বঙ্গবন্ধু পাস করছে। পাঞ্জাবি সৈনিকেরা আমগো টিটকারি দিয়া কইত, ‘শহিদ উদ্দিন, আবিতো তেরা হাতমে পাওয়ার চালা গিয়া।’

“প্রমোশনের বেলায় পাঞ্জাবিগো আগে দিত। আমগো লোকদের কম দিত। কুর্মিটোলায় ট্রানজিট ক্যাম্পে যখন ছিলাম তহন ভেতরেই দেহি কয়েকটা জায়গায় ট্রান্স করা। এক ব্যাটালিয়ানের ক্যান্টিন থেকে অন্য ব্যাটালিয়ানের ক্যান্টিনে গেলেই ওরা চেক করত। তহনই সন্দেহ করছি কিছু একটা ঘটব।”

৭ মার্চ ১৯৭১। বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিবেন রেসকোর্স ময়দানে। সিভিল ড্রেসে শহিদ উদ্দিন সহকর্মী বশিরকে নিয়ে শুনতে যান ঐতিহাসিক সে ভাষণ। এরপর কী ঘটল সে ইতিহাস জানালেন শহিদ উদ্দিন। তাঁর ভাষায়:

“শেখ সাহেবরে দেখার কৌতুহল ছিল। গিয়া দেহি লাখো মানুষ। বঙ্গবন্ধু কইলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দিব…আমি যদি হুকুম দিবার না পারি…’।

“এরপরই তো সব ওলটপালট হইতে থাকে। অসহোযোগের কারণে আমগো রেশন বন্ধ হয়। তহন রেশন আসে পশ্চিম পাকিস্তান থাইকা, কার্গো বিমানে। একদিন এয়ারপোর্টে আমগো নিয়া যায় রেশনের মাল আনতে। দেহি পাকিস্তানি সেনারা ওগো পরিবারের লোকদের বিমান ভর্তি কইরা পাঠায়া দিতাছে। সন্দেহ হইল। স্টাফরোডে মধ্যরাতে তহন ট্যাংক নিয়া ওরা ঘুরাঘুরি করত। ট্রেন বন্ধ ছিল। ১৯ মার্চ তারিখে আমরা ট্রেন পাইলাম। আমি আর বশির তহন বাড়িত চইলা আসি।”

মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন ভুইয়ার অনুকূলে সিএমএইচের ছাড়পত্র

ঢাকায় গণহত্যার খবর শহিদরা পান রেডিওতে। মনে তখন অজানা শঙ্কা। কী ঘটবে কেউ জানে না। আর্মির লোক পাইলে পাকিস্তানি সেনারা তো এমনিই মেরে ফেলবে। শহিদ ট্রেইন্ড সোলজার। চুপ করে বসে থাকতেও পারে না। তাই লড়াই-ই একমাত্র পথ। কিন্ত অস্ত্র ছাড়া লড়বে কীভাবে?

৩১ মার্চ ১৯৭১। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফোর বেঙ্গল বেরিয়ে এসে অবস্থান নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ক্যাপ্টেন আইনুদ্দিন ছিলেন দায়িত্বে। খবর পেয়ে শহিদ উদ্দিনও জয়েন করেন ওখানে। এরপরই তিনি দেশের স্বাধীনতার জন্য সন্মুখ যুদ্ধ করেন ২ নং সেক্টরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়ার বিভিন্ন স্থানে।

একটি অপারেশনের কথা জানালেন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন। তাঁর ভাষায়:

“আমরা তহন আখাউড়ায়, ফকিরমোড়া ইরাপুরে পজিশনে। পাকিস্তানি সেনাগো পুরা ব্যাটেলিয়ান ছিল পশ্চিমে। দুপুরের দিকে দেখলাম ওরা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবরটি সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে দেই মেজর আব্দুস সালেক চৌধুরির কাছে। উনি সবাইরে পজিশনে যাইতে কইলেন। নির্দেশ দিলেন উনি ফায়ার ওপেন না করা পর্যন্ত কেউ যেন ফায়ার না করে। আমি পজিশন নিছি পুস্কুনির পাড়ে।

“পাকিস্তানি সেনারা সোজা রাস্তায় ক্রলিং করে চইলা আসে রেঞ্জের ভিতরে। কিন্তু তবুও স্যার ফায়ার ওপেন করে না। চিন্তায় পইরা গেলাম! হঠাৎ ফায়ারের শব্দ। আমরাও গুলি চালাই। সামনের সারিতে থাকা পাকিস্তানি সেনারা মাডিত পইড়া যায়। তবুও ওরা কাবু হয় না। পেছন থাইকা বলে, ‘আগে বারো, আগে বারো’।

“প্রচণ্ড গোলাগুলি। এরপরই ওরা শেল মারতে থাকে। আমরা তহন টিকতে পারি না। সরে গিয়ে আশ্রয় লই ভারতের মনতলি স্কুলে। ওরা তহন আখাউড়া দখল করে। বাংলাদেশের পতাকা নামায়া পাকিস্তানি পতাকা ওড়ায়। খুব কষ্ট পাইছিলাম ওইদিন। আমগো কাছে পতাকাই ছিল সব।”

এক অপারেশনে গুলিবিদ্ধ হন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন। পাকিস্তানি সেনাদের গুলি তাঁর বুকের বাম পাশে ঢুকে লাং ফুটো করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। রক্তাক্ত ওইদিনের কথা মনে হলে আজও এ যোদ্ধার দুচোখ সিক্ত হয়।

কী ঘটেছিল ওই দিনটিতে?

খানিক নীরবতা। অতঃপর তিনি বলতে থাকেন রক্তাক্ত ওইদিনের আদ্যপান্ত:

“মনতলি স্কুল থাইকা আমাগো পাঠায় কামথানা বিওপিতে। ওখানে শালদা নদীর উত্তর পাশে পাকিস্তানিরা পজিশনে ছিল। ওগো পজিশনে অর্তকিত হামলা করতে হইব। আমি, সউদ মিয়া, হামিদ, কালামসহ ছয়জন। তিনটা দলে ভাগ হইয়া ওগো বাংকারের সামনে গিয়া মুখোমুখি ফায়ার করমু। ওরা মনে করব এনিমি সামনে আছে। তহন উত্তর দিকের রেল লাইনের নিচ দিয়া একটা কালভার্ট হইয়া আমগো আরও ৩০-৩৫ জন পেছন দিক দিয়া ওগো বাংকার চার্জ করব। সন্ধ্যায় এইডাই পরিকল্পনা হয়।

শহিদ উদ্দিন ভুইয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ

“৪ জুন ১৯৭১। রাত তহন সাড়ে ৩টা। মুখোমুখি হইয়াই আমরা ফায়ার করি। পাকিস্তানি সেনারা তহন টুইঞ্চ মর্টারের ফায়ার করে। সব গোলা গিয়া পড়ে আমগো পেছনে। প্রচণ্ড গোলাগুলি চলছে। আমি ছিলাম ধানখেতের আইলে। দুই পাশে সউদ মিয়া, আবুল কালাম আর হামিদ। পাকিস্তানিরা একটু উঁচুতে। হঠাৎ বুকে একটা ধাক্কা খাইলাম। তহনও কিছু বুঝি নাই। মনে হইছে বুকের ডান পাশে একটা গুঁতা লাগছে। ভাবছি লাঠির গুঁতা। কিছুক্ষণ পরেই আমগো লোকেরা পেছন থাইকা ওগো ওপর আক্রমণ করে। গোলাগুলি তহন শেষ। কোনো আওয়াজও নাই।

“তহন আমরা আসি গৌরাংগোলা গ্রামের মসজিদের পাশে। খালি গা। বুক দিয়া রক্ত পড়তেছিল। গাও শিরশির করছে। জোকে ধরছে নি! আঙ্গুল দিয়া ধরতেই দেহি বুকের ভিতরে আঙ্গুল ঢুইকা যায়। তহনই বুঝছি গুলি খাইছি। মনে তহন মৃত্যুভয়!

“এইহানে যদি মরি তাইলে তো ডেডবডিও কেউ পাইব না! এই ভাইবা এলএমজিডা হাতে নিয়া দৌড় দেই বর্ডারের দিকে। কিছুদূর যাওয়ার পরই চোখ ঝাপসা হইয়া আসে। একটা মাঠে পইরাই কলেমা পড়ি। মনে হইছে মারা যামু। গলা শুকাইয়া কাঠ। নিঃশ্বাসও নিতে কষ্ট হইতেছে। বুকের ওপর বাম হাতটা ছিল। সেইডা পেছনে নিতেই জমে থাকা পানির স্পর্শ পাই। ওই পানি মুখে দিতেই দমডা ফিরা আসে। আমি যে বাইচা থাকমু এইডা স্বপ্নেও ভাবি নাই ভাই। একাত্তরের পরে বোনাস লাইফ নিয়ে চলতাছি।”

চিকিৎসা নিলেন কোথায়?

“এক বাড়ির দরজার একটা পাল্লা খুইলা সহযোদ্ধারা আমারে তুইলা নেয়। গ্রামের এক ডাক্তার প্রথমে আমারে দেখে। জ্ঞান তহনও ছিল। উনি শুধু বললেন,‘আশা নাই’।

তবুও কোরামিন আর একটা ইনজেকশন দিতেই শরীরটা গরম হইল। এরপরই আমারে নেওয়া হয় আগরতলা জিবি হাসপাতালে। রক্তে হাসপাতালের ফ্লোর ভাইসা গেছিল। অপারেশন থিয়েটারে ডাক্তার রতিন দত্তর হাত ধইরা হাউমাউ কইরা কাইন্দা কইছিলাম, ‘যদি মইরা যাই তাইলে আমার ডেডবডিটা বাংলাদেশে পাঠাইয়েন স্যার।’

“উনি কিছু কইলেন না। আমার মুখের দিকে শুধু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাগো গুলিটি আমার বুকের ডান পাশ বিদ্ধ করে লাং ফুটো কইরা দেয়। অপারেশনে লাংয়ের কিছু অংশ কাইট্টা ফেলতে হয়। তহন রক্তও লাগছিল। তৎকালীন এমপিএ লুৎফুল হাই সাচ্চু আমারে রক্ত দিছে। তাঁর রক্তেই আজ বাঁইচা আছি।”

যে দেশের জন্য রক্ত দিলেন স্বপ্নের সে দেশ পেয়েছেন কি?

মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিনের উত্তর:

“পেলাম কোথায়? চাইছিলাম সুন্দর একটা দেশ। যেখানে হত্যা, রাহাজানি, অন্যায় থাকব না। খাই খাই থাকব না। কিন্তু সে দেশ তো হয় নাই। মানুষ একজনরে ভোট দিয়া চেয়ারম্যান করে। কিন্তু সে ভোটের মূল্যায়নই তো হয় না। বিচারে সে অন্যায়কে দমন করবে। এটাই তো হওয়ার কথা। আপনেরে বিচারের দায়িত্ব দিলাম। আপনি কিছু নিয়াটিয়া বিচার হালকা করে দিলেন। এইসব এহন গ্রামগঞ্জেও চলতাছে।”

কী করা দরকার?

“এক নম্বর কথা হইল সৎ থাকতে হইব। শুধু নেতাই না, সবাইকেই। আপনি অর্থলোভী হইবেন কিন্তু অন্যের সততা চাইবেন এইটা কিন্তু হইব না। ঠিকাদার উন্নয়নমূলক কাজ করে। দেখেন কত পারসেন্ট কাজ হয়। কত পারসেন্ট দিতে হয়। তাইলে ভালো কাজ হইব কেমনে? ন্যায়পরায়ণ হইতে হইবো। সঠিক বিচার করতে হইব। তা না হলে শত উন্নয়নেও দেশ এগোবে না।’

স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তান ফেরত বাঙালি সেনাদের নিয়ে সেনাবাহিনী গঠন প্রসঙ্গে এ যোদ্ধা অকপটে তুলে ধরেন নিজের মতামত:

“যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন শেখ মুজিব। পরিস্থিতিগত কারণে বাঙালি সেনারা পশ্চিম পাকিস্তানে আটকা পড়েছিল। তাই পাকিস্তান ফেরত বলেই কোনো বাঙালি সেনা দেশবিরোধী হবেন এই ভাবনাটা মোটেই ঠিক নয়। আমি মনে করি এইটা বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ছিল। বরং আগে সেনাবাহিনীতে তেমন রাজনীতি ছিল না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেনাবাহিনীতেও রাজনীতি ঢুকে গেছিল।”

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন ভুইয়া

 

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন জিয়াউর রহমান। তাঁর মন্ত্রিসভায় স্থান পায় যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকাররা। সরকারি প্রটোকল মেনে সে সময় রাজাকারদেরই স্যালুট দিতে হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিনকে। সে সময়কার কষ্টের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন:

“কষ্টের কথা বুঝাইতে পারমু না ভাই। অর্ডারের বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। তহন ভাবতাম রক্ত দিয়া কেন পতাকা আনলাম! ওগো সালাম দিতে বুকটা তো ফাইটা যাইত।”

৪৬ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বাড়ে কেন?

মুচকি হেসে এই সূর্যসন্তান বলেন:

“দায়ী তো আমরাই। এ ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমি। যারা জীবনে কোনোদিন যুদ্ধের কথা কয় নাই এমন লোকও এহন কয় মুক্তিযুদ্ধ করছে। আমি ওগো ফরমে স্বাক্ষর দেই নাই। দেশের সাথে এমন গাদ্দারি করতে আমি পারমু না। এজন্য আমার বিরুদ্ধেই ওরা অভিযোগ দিছে। এহন অমুক্তিযোদ্ধাগো শক্তিই বেশি। সরকার কী মনে কইরা নতুন আবেদন নিতাছে, মাথায় ঢুকে না। যত সুযোগ দিবেন মুক্তিযোদ্ধাগো তালিকা তত ভুয়া হইবো। তাই এই তালিকা বন্ধ হওয়া উচিত।”

হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের চেতনা কখনও মিলবে না বলে মনে করেন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন। হেফাজতের সঙ্গে সরকারের একধরনের আপসকে তিনি রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর বলে অভিহিত করেন।

“প্রথম কইছেন, ‘তেঁতুল হুজুর’, ‘তেঁতুল হুজুর’। এহন মিল্লা যাইয়া কন, ‘মিষ্টি হুজুর’, ‘মিষ্টি হুজুর’। তাইলে তো হইব না। তেঁতুল হুজুররা সঙ্গে থাকলে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হইব না। প্রকাশ্য শক্রও ভালো। সর্তক হওয়া যায়। কিন্তু ওরা তো ভেতরে ঢুইকা সুযোগ পাইলেই ইঁন্দুরের মতো কাটব। তাই হুজুরগো ওপর নির্ভরশীলতা আমগো কমাইতে হইব।’

দেশ কেমন চলছে?

“শেখের মাইয়া ভালো উন্নতি করছে। আগে তো বিদুৎ পাইতাম না। এহন ঘরে ঘরে বিদুৎ। রাস্তাঘাটগুলা পাকা হইছে। যোগাযোগব্যবস্থাও উন্নত। কিন্তু ঘরে ঘরে মাদক ঢুকে গেছে। মদ, গাঁজা, ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছে যুবকরা। মাদকের বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর সিদ্ধান্ত নিলে দেশ আরও এগোবে।”

শত সমস্যা কাটিয়ে নতুন প্রজন্মের হাত ধরেই এদেশ একদিন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হবে– এমনটাই বিশ্বাস যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক শহিদ উদ্দিন ভুইয়ার। পাহাড়সম আশা নিয়ে তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন:

“দেশপ্রেম মানুষের শক্তি। পতাকা তোমার পরিচয়। তোমার পরিচয়টাই তুমি সবার ওপরে তুলে ধরো। মাদক থেকে দূরে থেক। মনে রেখ তোমার ভবিষ্যৎ নষ্ট করতেই মাদকের সৃষ্টি।”

 

সংক্ষিপ্ত তথ্য:

নাম : যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক শহিদ উদ্দিন ভুইয়া
ছিলেন: সেনাবাহিনীর সৈনিক। আর্মি নম্বর ১৩১৮৪৯৬

যুদ্ধ করেন: ২ নং সেক্টরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়ার বিভিন্ন স্থানে
যুদ্ধাহত: ৪ জুন ১৯৭১। শালদা নদীর উত্তর পাশ থেকে আসা পাকিস্তানি সেনাদের একটি গুলি তাঁর বুকের বাম পাশ দিয়ে ঢুকে লাং ফুটো করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

ছবি ও ভিডিও: লেখক

 

লেখক পরিচিতি:

Author

: লেখক, গবেষক, প্রকাশিত: বিডিনিউজ২৪ডটকম

প্রকাশিত: প্রথম আলো, ১৯ এপ্রিল ২০১৪

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন,

‘আমরা তোমাদের প্রধানমন্ত্রীকে গালি দিই নাই, শুধু শুধু আমাদের দিকে চোখ বড় করে তাকাও কেন? নাস্তিকরা তোমরা মুরতাদ হয়ে গেছ, তোমাদের কতল (হত্যা) করা আমাদের ওপর ওয়াজিব হয়ে গেছে।’

আল্লামা শফী আরও বলেন,

‘হেফাজতে ইসলাম কাউকে গদিতে বসাতে-নামাতে আন্দোলনে নামে নাই। আমরা আন্দোলন করছি ১৩ দফা মানার জন্য। সরকার, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নাই। তারা মুসলমান হলে আমাদের ১৩ দফা মেনে নেবে। ১৩ দফা মানলে ভালো, না মানলে নাই।’

গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র আলহাজ কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের হকার-ব্যবসায়ী আয়োজিত ইসলামি মহাসম্মেলনে আল্লামা শফী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

আল্লামা শফী বলেন,

‘তারা কোথায় কী স্বপ্ন দেখেছে, কওমি মাদ্রাসার মধ্যে জঙ্গি আছে। স্কুল-কলেজে তো দুই দল মারামারি-গোলাগুলি করে, জঙ্গি বললে তাদেরই বলতে হবে। বাংলাদেশের কোনো মাদ্রাসার মধ্যে দুই দল মারামারি-গোলাগুলি করেছে, এ রকম প্রমাণ দিতে পারলে আমি তাদের পুরস্কৃত করব।’ তিনি বলেন, ‘নাস্তিকদের গালি দিলে কারও গায়ে লাগলে আমার করার কিছু নাই। আল্লাহর দেশে থাকতে হলে আল্লাহকে না দেখে আল্লাহর অস্তিত্ব মানতে হবে, না হলে তুমি আল্লাহর দেশে থাকতে পারবে না।’

ইসলামি মহাসম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পেকুয়া আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা জালাল আহমদ।

 

দলে অবাঞ্ছিতদের অনুপ্রবেশ বোঝাতে কাউয়ার পর এবার দেশি ও ফার্মের মুরগির উপমা ব্যবহার করলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি দলের পুরনো নেতা-কর্মীদেরকে দেশি মুরগি এবং স্বার্থের কারণে দলে আসা নেতা-কর্মীদেরকে ফার্মের মুরগি বলছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, এই ফার্মের মুরগির কারণে দেশি মুরগিরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের শপথগ্রহণের স্মরণে মেহেরপুরের মুজিবনগরে এক সমাবেশে এই কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দীন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী করে মুজিবনগরের যে আমবাগানে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার শপথ নিয়েছিল সেখানেই অনুষ্ঠান করে ক্ষমতাসীন দল।

আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের কতা বলতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের তার বহুল আলোচিত উপমা কাউয়ার প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি বলেন,

‘সিলেটে বলেছিলাম, কাউয়া, এখানে আর কাউয়া বলবো না। কিন্তু এখানেও মনে হয় ফার্মের মুরগি ঢুকে গেছে। দেশি মুরগি দরকার, ফার্মের মুরগি দরকার নাই। এটা স্বাস্থ্যকর নয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন,

‘দেশি মুরগি কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে, ফার্মের মুরগি ঢুকতেছে। একটু খেয়াল রাইখেন।’

এরপর জনসভায় উপস্থিত কর্মীদেরকে ‍উদ্দেশ্য করে মঞ্চে উপস্থিত নেতাদেরকে দেখিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন,

‘ওখানে কোনো সমস্যা সেই, এইখানে সমস্যা। এই যে দেখেন, পুরা মঞ্চে নেতা, তো আর নেতা, বিলবোর্ডে দেখি আতি নেতা, পাতি নেতা, ছোট নেতা, বুড়া নেতা, সিকি নেতা, আধুলি নেতা, নেতার আর অভাব নাই।’

ওবায়দুল কাদের বলেন,

‘বাইরে দেখি এক চেহারা, বিলবোর্ডে দেখি আরেক চেহারা। নেত্রী বানিয়েছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ, আর একেকজনের একেক চেহারা হয়েছে। বাইরে দেখি এক আর বিলবোর্ডে দেখি আরেক চেহারা। এই অবস্থা হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘শান্তিতে থাকুক, তবে আওয়ামী লীগের নাম দিয়ে অপকর্ম করলে বিলবোর্ডের নাম দিয়ে, এটা কিন্তু সহ্য করা হবে না। এই সব চলবে না্। আওয়ামী লীগের নামে অপকর্ম চলবে না।’

বিএনপি ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার দিবস পালন না করায় তাদের সমালোচনাও করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তিনি বলেন, ‘মুজিবনগরে যে সরকার শপথ নিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে সরকার প্রধান করে সেদিন যে সরকার গঠিত হয়েছিল সেই সরকারের অধীনে যারা বেতনভুক্ত ভোগ করতো, সেক্টর কমান্ডার ছিল, তাদের দল আজ ১৭ এপ্রিল পালন করে না।

১৭ এপ্রিল যারা পালন করে না, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে কি না আমার সন্দেহ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যারা লালন করে, ১৭ এপ্রিলের প্রথম সরকার গঠনের চেতনাকেও লালন করতে হবে। যারা করে না, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই প্রকারান্তরে অস্বীকার করে।’

সূত্র: ঢাকাটাইমস, ১৭ এপ্রিল ২০১৭