Archive for the ‘ধর্ম’ Category

A college teacher in Pirojpur has been hospitalised with severe injuries inflicted by a sharp weapon.

 

Sadananda Gain, who teaches English at the Government Suhrawardi College, was attacked by a man around 6am on Monday at the district town’s bypass area, said police.

The associate professor is now being treated at the Khulna Medical College Hospital with critical head injuries, said Pirojpur police OC Md Masumur Rahman Biswas.

The victim’s colleague Samarjit Hawladar said Gain was attacked while he was taking a walk.

“A young man, armed with a sharp weapon, struck his head from behind and fled immediately. Locals rushed him to the state-run hospital in Pirojpur town,” he said.

The attack left Gain with ‘a seven-inch long’ gash on the head, said Pirojpur hospital’s physician Shishir Ranjan Adhikari. “He has been sent to the Khulna Medical College Hospital as the injury was critical.

Police have seized a machete from the spot. “We have launched an investigation,” said OC Biswas.

 

পিরোজপুরে কলেজশিক্ষককে কুপিয়ে আহত

সদর থানার ওসি মো. মাসুমুর রহমান বিশ্বাস জানান, সোমবার সকাল ৬টার দিকে শহরের বাইপাস সড়কের নতুন জেলখানার সামনে তার ওপর হামলা হয়।

আহত সদানন্দ গাইন ওই কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সদানন্দের সহকর্মী সহযোগী অধ্যাপক সমরজিৎ হাওলাদার বলেন, প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে হাঁটতে বের হন সদানন্দ।

“হঠাৎ এক যুবক পেছন থেকে এসে ধারালো দা দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।”

তার মাথায় ‘প্রায় সাত ইঞ্চি’ লম্বা ক্ষত হয়েছে জানিয়ে পিরোজপুর হাসপাতালের চিকিৎসক শিশির রঞ্জন অধিকারী বলেন, “আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি রামদা উদ্ধার করেছে।

ওসি বিশ্বাস বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি দেশি রামদা দেখতে পাই। হামলাকারীকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।”

 

 

Author

লিখেছেন: অজয় দাশগুপ্ত

 

বদলে যাচ্ছে দেশ, বদলে গেছে রাজনীতি। আগে রাজনীতির কথা বলি। তার বদলানো আসলেই কি নতুন কিছু?

দেশ স্বাধীনের পর পর আমরা হোঁচট খেয়েছিলাম ভুট্টোর আগমনে। জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকায় আসতেই পারেন। একবার যুদ্ধ হলেই কোনো দেশ চিরকালের দুশমন হয়ে যায়, তেমন না-ও হতে পারে। তবে পাকিস্তানের ব্যাপারে সেটা ঠিক নয়। তারা এখন অবধি আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়ের মতো সেদেশে একজনকেও খুঁজে পাওয়া যায় না যার প্রগতিবাদের প্রতি কমিটমেন্ট সবসময় একধরনের।

এই লেখা যখন লিখছি, দেখলাম, হামিদ মীর নাকি তার পিতাকে দেওয়া বর্তমান সরকারের সম্মাননা ফেরত দেবেন। বুঝুন এবার। হতে পারে এই সম্মাননার কারণে তিনি তার দেশে নিরাপদে বেঁচে থাকতে পারবেন না। আবার এ-ও হতে পারে এখন তার মনে হচ্ছে বাংলাদেশিদের দেওয়া সম্মাননা ‘না-জায়েজ’। এই হল পাকিস্তান।

বলছিলাম ভুট্টো সাহেবের কথা। দেশ মুক্ত হওয়ার পরপর ঢাকায় আসা এই বাংলাদেশবিরোধী পাকিস্তানির জন্য দরদ উথলে উঠেছিল কিছু মানুষের। রাজপথে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না আর মনে মনে দোয়া দিয়ে পথ ভাসানো পাকিদরদীরা আসলে তখন থেকেই সক্রিয়।

সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে এরা সুবিধা করতে না পারলেও আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করিনি। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের সময়ের সেক্যুলার সরকারপ্রধান তাজউদ্দীনকে অবহেলা করেছিল নির্মমভাবে। তাঁর প্রজ্ঞা-মেধা-দূরদর্শিতা ব্যবহার করতে পারলে হয়তো অনেক বিপদ এড়ানো সম্ভব হত।

এর ফাঁকে বেড়ে ওঠা পাকিদরদী চক্র মোশতাকের হাত ধরে প্রথম সামনে এলেও আওয়ামী লীগ কোনো এক অজ্ঞাত কারণে জিয়াউর রহমানকে যত বড় শত্রু মনে করে, মোশতাককে হয়তো তত বড় দুশমন মনে করে না। অথবা দলের কলঙ্ক বলে তাকে এড়িয়ে চলে। কিন্তু বাস্তবতা এই খন্দকার মোশতাকই বঙ্গবন্ধুর রক্তের ওপর সরকার গঠন করে খুনিদের ‘সূর্যসন্তান’ ডেকেছিল। সেই থেকে রাখঢাকের রাজনীতিতে ঢুকে পড়া আওয়ামী লীগও এখন পরিবর্তনের শিকার।

এদেশের মানুষের মন বোঝা কঠিন কিছু না। আসলে আমরা বলতে চাই না। কারণ বললে আমরা ছোট হয়ে যাই। জিয়াউর রহমানের স্বল্পকালীন শাসন কি এত প্রতাপ আর সাহস রাখে যে দেশ পাল্টে দিতে পারে? মূলত মানুষের মনে মনে ‘পাকিস্তান প্রেম’ আগে থেকেই বাসা বাঁধতে শুরু করেছিল। তারা সুযোগের সন্ধানে ছিল মাত্র।

সেই সময় থেকে আজ অবধি আওয়ামী লীগের সমর্থন কমে-বাড়ে, কিন্তু বিএনপির কমে না। কারণ বিএনপি জামায়াতও না, আবার বামও না। দেশের মধ্যবিত্তের মনে মুসলিম মনোভাব প্রবল বলে তারা বাঙালি হতে দ্বিধান্বিত। অথচ বাঙালি না হলে পহেলা বৈশাখে যাওয়া যায় না। শহীদ মিনারে যাওয়া যায় না। শোভাযাত্রায় সামিল হওয়া যায় না।

জামায়াতের আদর্শ ভালো লাগলেও তারা কট্টর জীবনযাপন মানতে পারেন না। তাদের চাই জিন্নাহ সাহেবের মতো জীবন। ধর্মের নামে রাজনীতি ও সমাজকে বশে রেখে নিজে পানাহার করতে হবে। স্যুট-কোট-টাই পরা ছাড়বে না। নিজেরা দিল্লি যাবে। ভারতে শপিং করবে, ডাক্তার দেখাবে, কিন্তু জনগণকে করা হবে মৌলবাদী ও ইসলামাবাদমুখী।

জিয়াউর রহমানের আমলে কর্নেল ওসমানী হেরেছিলেন ভোটে। মানুষ মুক্তিযুদ্ধের সিপাহসালারকে সেভাবে মূল্যায়ন করেনি। কেন করেনি? কারণ তারা তখন থেকেই বদলে যাচ্ছিল। বদলে না গেলে হাফেজ্জি হুজুর কীভাবে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন মানুষের ভোটে? শাহ আজিজ কি কেবল কারো দয়ায় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন? মানুষ তাকে নেয়নি? বদলে যাওয়া বাংলাদেশে মাওলানা মান্নান থেকে নিজামী বা হেফাজতের হুজুর সবাই জায়েজ।

এই রাজনীতির ফল এতদিন বিএনপি একা খেলেও এখন আর তা হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ বুঝে গেছে তারা আসলে ‘মাইনরিটি’। ভোটের অংকে তারা ৪০ ভাগও না। বাকি ৬০ ভাগ আওয়ামীবিরোধী। এই সমীকরণে পাওয়ারে থাকতে হলে সমঝোতার বিকল্প আছে?

নিন্দুকের বলে মোটা অংকের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় নাকি হেফাজতের একাংশ আওয়ামীমুখী। আবার এ-ও বলা হয় হেফাজত এই সরকারের আমলেই জামায়াতের বিকল্প হতে চায়। হতে চাওয়াটা অন্যায়ের কিছু নয়। কিন্তু আপত্তি থাকে তাদের মত ও পথের বিবেচনায়। যে ১৩ দফা তাদের, আদর্শ কি আছে সেখানে? ভালো করে দেখুন– ১৩ দফা জামাতের চেয়েও ভয়াবহ। অথচ তারা এখন দেশের সমঝোতার রাজনীতিতে চমৎকার জায়গায়। কথা হচ্ছে এই সমঝোতা কি আওয়ামী লীগকে আসলে নিরাপদে রাখবে?

মনে পড়ছে সেই ভয়াবহ দিনরাতের কথা। হেফাজতের শাপলা সমাবেশ নিয়ে কিছু মিডিয়ার মাতম। অাজ যিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সেই এরশাদ সাহেব পানি পান করানোর দায়িত্ব নিয়ে গুনাহ মওকুফের পাশাপাশি সরকার পতনে সমর্থন দিয়েছিলেন। বিএনপি তো মানুষকে ঘর থেকে বেরুনোর ডাক দিয়ে দিয়েছিল। সেই রাতে নিরাপত্তা বাহিনী অার প্রধানমন্ত্রীর সাহস একত্রিত না হলে কী হত, বলা মুশকিল। এর পরপর তখনকার অাওয়ামী শপথ অার অাজ ভাস্কর্য সরানোর সমঝোতার সমীকরণ মেলে না। বরং কেন জানি মনে হয়:

“তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে।”

এটা নিশ্চিত দেশের বেশিরভাগ মানুষের মন বুঝে আওয়ামী লীগ মত বদলেছে। তবে এটা মনে রাখা দরকার বাজারে দুধ থাকলে তার ভক্তেরা ঘোল গিলবে না। জামায়াত-বিএনপি-হেফাজত একাকার হলে মিলে যায়। অাওয়ামী লীগ সেখানে ‘মিসফিট’।

তবে এটা বুঝতে পারছি কৌশলে বাগে রাখার রাজনীতি চলছে। দড়ি শিথিল হলে বা শেখ হাসিনা গেলেই গণভোটের মতো কিছু একটা হয়ে পতাকা যাবে। জাতীয় সঙ্গীত ‘হারাম’ হবে! দেশের নাম কী হবে, কেউ বলতে পারে না! সে চক্রান্ত না রুখে অাপস মানে মুক্তিযুদ্ধকে বিপদে ফেলে দেওয়া। স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেওয়া দল যদি তা করে এদেশে বাম ডান কেউই নিরাপদ থাকবে না।

বেশ কয়েক বছর অাগে বহুল প্রচারিত ঘোর অাওয়ামীবিরোধী দৈনিকটি স্লোগান দিয়েছিল: ‘বদলে যাও, বদলে দাও।’

এখন অাওয়ামী লীগও তার শিকার। ‘অাওয়ামী মুসলিম লীগ’ থেকে ‘অাওয়ামী লীগ’এ রূপান্তরিত দল এখন অাবার উল্টো রথে। বদলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ভীত দেশ দেখছে, দেখছেন বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন ও প্রয়াতেরা।

সামনে কী অাছে কেউ জানে না। শুধু খোলস বদলালেই কি সমাজ বদলায়, না দেশ?

 

অজয় দাশগুপ্ত, কলামিস্ট। প্রকাশিত: বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম, ১ মে, ২০১৭

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলাটিমের ‘তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের প্রধানকে’ গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।

পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার ওই জঙ্গির নাম আশফাক উর রহমান অয়ন। সে আরিফ ও অনিক নাম ব্যবহার করেও জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।

সোমবার রাতে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে নয়নকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ইউসুফ আলী জানান।

তিনি বলেন, পরে সংবাদ সম্মেলন করে অয়নের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।

২০১৩ সালে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের তৎপরতার খবর আসে। সংগঠনটির আমির মুফতি জসীমউদ্দীন রাহমানী ওই মামলার রায়ে দোষি সাব‌্যস্ত হয়ে কারাভোগ করছেন।

২০১৫ সালের মে মাসে নিষিদ্ধ হওয়া আনসারুল্লাহ বাংলা টিম লেখক অভিজিৎ রায় হত‌্যাসহ বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলা ও হত‌্যার ঘটনায় জড়িত বলে গোয়েন্দাদের ধারণা।

 

Ansarullah Bangla Team’s IT chief Ashfaqur hacked profiles to get info on bloggers: Police

 

Courtesy: bdnews24.com,  Published: 02-05-2017

 

Hundreds of Bangladeshi female workers are gathering in the missions in Riyadh and Jeddah after failing to get promised jobs or allegedly being tortured by employers.

Around 329 such female workers took shelter in the Bangladesh Embassy in Riyadh and the consulate general until Sunday and the number is growing everyday.

Bangladesh Labour Counsellor Sarwar Alam in Saudi Arabia told bdnews24.com that 502 female workers, who had taken shelter in the embassy, were sent back on Mar 29.

Out of the 329 who have taken shelter since then, 74 are in the Jeddah Consulate General while the rest are in the Bangladesh Embassy in Riyadh.

These workers have alleged they did not get the job as promised by agents in Bangladesh. They came to Saudi Arabia through private recruiters as legal workers.

Some of them said they were promised nurse and peon’s posts but they got cleaner’s posts.

Most of the workers who have taken shelter at the embassy and the consulate general have gone to Saudi Arabia to work as housemaid.

They have alleged that they were not provided food three times a day, let alone regular payments.

Some of them, on condition of anonymity, also alleged physical and sexual torture by their employers.

One of the workers told bdnews24.com: “I had been told that I would get the job of an assistance of a nurse in a hospital. But I was given the job of a cleaner in a house. Then I was tortured. So I fled and took shelter in the embassy three weeks ago.”

Many others, waiting for more time than her, do not know when they can return home.

Some have fallen sick in the overcrowded shelters stretched beyond the capacity.

Jeddah Consulate General official Abu Jara said it has the capacity to shelter 35 but 74 workers have taken shelter there.

He told bdnews24.com that the process to send back 34 of them already started.

He said it ‘would not be easy’ to send back the 40 others because they fled their employers.

In line with rules, the Saudi Arabia government has to be informed by the employers if any worker flees. It takes time to send back such workers without completing the administrative process.

“We’ve informed the foreign ministry and now we are waiting for the reply,” Abu Jara said.

Asked when all the female workers who have taken shelter in the embassy and the consulate general could be sent back, Bangladesh Ambassador in Saudi Arabia Golam Moshi told bdnews24.com that it is an ongoing process.

“It usually takes two to eight weeks for us to send any worker back after he or she comes to us,” he said.

“The workers are regularly taking shelter in the embassy and we are sending them back,” he said, adding that the Saudi authorities were ‘very cooperative’ in this regard.

“The workers leave job by breaching their contracts following misunderstanding most of times. But the Saudi authorities always cooperate with us to send them back,” he said.

Saudi Deputy Crown Prince Mohammed bin Salman

‘নির্যাতন- প্রতারণায়’ সৌদি ছাড়ছেন বাংলাদেশি নারী শ্রমিকরা

 

‘নির্যাতন- প্রতারণায়’ সৌদি ছাড়ছেন বাংলাদেশি নারী শ্রমিকরা

আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর আশায় সৌদি আরব পাড়ি দিলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না পাওয়ার পাশাপাশি গৃহকর্তাদের নির্যাতনের মুখে কাজ ছেড়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে আশ্রয় নিচ্ছেন বাংলাদেশের শত শত নারী শ্রমিক।

বিদেশ নামে সোনার হরিণের আশা বাদ দিয়ে দেশে ফেরার আশায় সৌদি আরবের রিয়াদ দূতাবাস ও জেদ্দার বাংলাদেশ মিশনে রোববার পর্যন্ত প্রায় ৩২৯ জন নারী শ্রমিক আশ্রয় নিয়েছেন। প্রতিদিন বাড়ছে তাদের সংখ্যা।

এর আগে গত ২৯ মার্চ থেকে এক মাসে দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়া ৫০২ জন নারী শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের লেবার কাউন্সেলর সারোয়ার আলম।

নতুন করে আশ্রয়ে থাকা ৩২৯ নারীর মধ্যে জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটে রয়েছেন ৭৪ জন, বাকি আড়াই শতাধিক রয়েছেন রিয়াদ দূতাবাসে।

এসব নারী শ্রমিকদের অভিযোগ, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বৈধভাবে শ্রমিক হিসেবে এলেও বাংলাদেশ থেকে দালালরা যেকাজের কথা তাদের বলেছিল, সৌদি আরব গিয়ে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেই কাজ তাদের দেওয়া হয়নি।

রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়া কয়েক নারী বলছেন, তাদের কাউকে কাউকে হাসপাতালে নার্সের সহযোগী ও পিয়নের কাজের কথা বলা হলেও সেখানে যাওয়ার পর দেওয়া হয়েছে ক্লিনারের কাজ।

আশ্রয় নেওয়া অধিকাংশই মূলত গৃহশ্রমিক, যারা ঠিকমতো বেতন না পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনবেলা ঠিকমত খাবার না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন।

এছাড়া দিনে দিনে শারীরিক নির্যাতন বাড়তে থাকার পাশাপাশি যৌন নির্যাতনের কারণেও পালিয়ে দূতাবাসের শেল্টারহোমে আশ্রয় নিয়েছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান কয়েক নারী শ্রমিক।

রিয়াদ দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়া নারী শ্রমিক (নাম প্রকাশ করা হল না) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দেশ থেকে তাকে হাসপাতালে নার্সের সহযোগী হিসেবে কাজের কথা বলা হয়েছিল। তাকে সেই কাজ না দিয়ে দেওয়া হয়েছে বাসার ক্লিনারের কাজ।

প্রতিশ্রুত কাজ না পাওয়ার সঙ্গে তার উপর যোগ হয় নির্যাতন। এসব সহ্য করতে না পেরে তিন সপ্তাহ আগে ওই বাসা থেকে পালিয়ে রিয়াদের দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার কথা জানান তিনি।

তিন সপ্তাহ দূতাবাসের আশ্রয়কেন্দ্রে কাটিয়ে দেওয়া এই নারীর মতো অনেকে আরও বেশি সময় ধরে রয়েছেন। কবে ফিরতে পারবেন, তাও জানেন না।

এদিকে দেশে ফেরার আশায় প্রতিদিনই আশ্রয়কেন্দ্রে নতুন নতুন নারী শ্রমিক আসায় বর্তমানে রিয়াদ দূতাবাস ও জেদ্দার মিশন, দুই স্থানেই আশ্রয় কেন্দ্রে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত নারী শ্রমিক রয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই থাকা খাওয়ার সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট লেবার কাউন্সেল বিভাগের কর্মকতা আবু জারা জানান, জেদ্দার আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৫ জনের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে, কিন্তু বর্তমানে রয়েছে ৭৪ জন।

এদের মধ্যে ৩৪ জনকে দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলছেন, বাকি ৪০ জন নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের হেফাজত থেকে পালিয়ে আসায় তাদের দেশে পাঠানো সহজ হচ্ছে না।

নিয়ম অনুযায়ী, কোনো শ্রমিক পালিয়ে গেলে বা নিখোঁজ/হারিয়ে গেলে ওই শ্রমিকের হেফাজতকারী কর্তৃপক্ষ বা মালিককে বিষয়টি সৌদি সরকারকে অবহিত করতে হয়। এবিষয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম শেষ না করে শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠানো সময়সাধ্য ব্যাপার।

ওই ৪০ নারী শ্রমিককে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আবু জারা বলেন, “আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি, উত্তরের অপেক্ষায় আছি।”

বর্তমানে আশ্রয় নেওয়া নারী শ্রমিকদের কবে নাগাদ দেশে পাঠানো যাবে- এমন প্রশ্নে শ্রমিকদের দেশে ফেরত পাঠানোকে দূতাবাসের একটি চলমান কার্যক্রম বলছেন সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শ্রমিকদের দেশে ফেরত পাঠানো একটি অনগোয়িং প্রসেস। সাধারণত কোনো শ্রমিক আমাদের কাছে আসার পর দুই থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগে, এরমধ্যে আমরা সব প্রক্রিয়া শেষ করে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দিই।”

শ্রমিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ ‘অত্যন্ত সহযোগিতাপরায়ণ’ মন্তব্য করে মসীহ বলেন, “নিয়মিতই শ্রমিকরা দূতাবাসে আশ্রয় নিচ্ছেন, তাদেরকে দেশে ফেরতও পাঠানো হচ্ছে।

“বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝির কারণে শ্রমিকরা চুক্তি ভঙ্গ করে কাজ ছেড়ে দেন। তারপরও তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ আমাদের সহযোগিতা করে।”

 

Courtesy: bdnews24.com,  Published: 02-05-2017, বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম

 

 

মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক গবেষক সালেক খোকন এর ধারাবাহিক সিরিজ

 

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০১ :  রাজাকার তো রাজাকারই থাকে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০২ :  নতুন প্রজন্ম সত্য জানতে চায়

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৩ : রাজাকারের শাস্তি হলে শান্তি পেতাম

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৪ :  পরের যুদ্ধটা ছিল আরও কঠিন

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৫ :  কাদের মোল্লার হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী আমি

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৬ :  বঙ্গবন্ধুর নাম তখন বলাই যেত না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৭ :  ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৮ :  আর দাঁড়াতে পারলাম না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-০৯ :  স্বাধীনতা দিবস হওয়া উচিত ছিল ৭ মার্চ

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১০ :  মৃত্যুর পর সম্মানের দরকার নেই

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১১ :  রাজাকারদের উত্থান দেখে ভাবিনি বিচার হবে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১২ :  শেখের মাইয়াই আমগো খেয়াল রাখে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৩ :  ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৪ :  মিথ্যা দিয়ে ইতিহাসের সত্য বদলানো যায় না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৫ :  মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিরক্ষার পরিবর্তে ধ্বংস করা হয়েছে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৬ :  শেখের বেটিই মুক্তিযোদ্ধাগো কষ্ট বুঝে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৭ :  আমি সেনাবাহিনীর ট্রেইন্ড যোদ্ধা, বসে থাকতে পারি না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৮ :  তাঁর ভালোবাসার সুযোগ নিয়াই ওরা তাঁরে খুন করসে

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-১৯ :  পাকসেনাদের বিচার করা দরকার ছিল

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২০ :  বঙ্গবন্ধুর মেয়ে রাজাকারের সঙ্গে আঁতাত করতে পারে না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২১ :  দেশটা তো মায়ের মতো

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২২ :  দ্রুত এদের শাস্তি কার্যকর করা উচিত

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৩ :  রাজাকারের সর্বনিম্ন শাস্তি ফাঁসি

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৪ :  সেরা বুদ্ধিজীবীদের ওরা হত্যা করেছিল

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৫ :  সমন্বিত আক্রমণ অপারেশন জ্যাকপট

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৭ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৮ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-২৯ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩০ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩১ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩২ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৩ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৪ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৫ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৭ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৮ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৩৯ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪০ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪১ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪২ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৩ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৪ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৫ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৭ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৮ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৪৯ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫০ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫১ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫২ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৩ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৪ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৫ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৭ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৮ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৫৯ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬০ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬১ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬২ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৩ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৪ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৫ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৬ :

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৭ :  তেঁতুল হুজুররা সঙ্গে থাকলে কিন্তু সোনার বাংলা হইব না

যুদ্ধাহতের ভাষ্য-৬৮ :

 

 

 

 

============================================================

সিরিজ লেখক: সালেক খোকন, গবেষক।

সিরিজ প্রকাশ শুরু হয়েছে ১৫ জুন, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ হতে, বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম-এ।

চম্পকনগর বাজারের পাশ দিয়েই চলে গেছে পূর্ব দিক বরাবর একটি পাকা রাস্তা। খানিক এগোতেই বদলে যেতে যায় আশপাশের দৃশ্য। লাল মাটির আঁকাবাঁকা পথ। মাটি আঁকড়ে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি কাঁঠাল গাছ। রাস্তার পাশের খেত পাকা ধানে ভরা; সোনালী রং লেগেছে তাতে, দমকা হাওয়ার ঝাপটায় মাঝেমধ্যেই তা নুয়ে পড়ছে জমির বুকে। পাখপাখালির কণ্ঠ ভেসে আসছে চারপাশ থেকে। এমন মনোহর দৃশ্যে বিভোর হয়ে একসময় আমরা পৌঁছে যাই গন্তব্যে।

গ্রামের নাম বিষ্ণুপুর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার এ গ্রামেই বসবাস করছেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক শহিদ উদ্দিন ভুইয়া। এ বীর মুক্তিযোদ্ধার কথা শুনি ঢাকায় বসবাসরত এ গ্রামেরই সন্তান সরকার জাবেদ ইকবালের মুখে। আগ্রহী হতে তিনিই আমাদের ঠিকানাটি দিয়ে সাহায্য করেন।

‘কমান্ডারের বাড়ি’ কোথায়?

প্রশ্ন শুনেই বিষ্ণুপুরের মধ্যবয়সী এক যুবক আগ্রহ নিয়ে দেখিয়ে দেন উত্তর পাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিনের বাড়ি। অতঃপর আমরা তাঁর মুখোমুখি হই।

ফোরকান উল্লাহ ভুইয়া ও মালেকান্নেছার পঞ্চম সন্তান শহিদ উদ্দিন ভুইয়া। লেখাপড়ায় তাঁর হাতেখড়ি বিষ্ণুপুর প্রাইমারি স্কুলে। অতঃপর ষষ্ঠ শ্রেণিতে তিনি ভর্তি হন মিরাশানি পলিটেকনিক একাডেমি হাই স্কুলে। ওখান থেকেই তিনি মেট্রিক পাস করেন ১৯৬৪ সালে।

শৈশব ও কৈশোরের নানা ঘটনাপ্রবাহ আজও উদ্দিপ্ত করে শহিদ উদ্দিনকে। স্মৃতি হাতড়ে তিনি জানালেন সেসব দিনের কথা।

“তহন ফুটবল খেলতাম। মেরাশানি হাই স্কুল টিমের গোলকিপার ছিলাম। বন্ধু আলিম, মন্নাফ, বশির উদ্দিন, আবুল কাশেমের কথা খুব মনে পড়ে। কাশেমের বাড়ি ছিল মুকুন্দপুর। একবার তার খুব অসুখ হয়। তহন এইটের ক্লাস মনিটর আমি। ক্লাস ভাইঙা একদিন ওরে দেখতে গেছিলাম। ফেরার পথে মুকুন্দপুর রেলস্টেশন থাইকা ট্রেন ধরি। আজমপুর স্টেশনে নামার সময় হ্যান্ডেলে ধইরা দৌঁড়াইয়া সামনের দিকে লাফ দিয়া নামি আমরা। কিন্তু মন্নাফ ডাইরেক্ট জাম্প দিয়াই চাকার নিচে পইরা যায়। আমি ওরে টাইনা তুলি। তা না হইলে ওইদিন ও মারা যাইত।

 

“আব্দুর রহমান, শহিদ উদ্দিন, মইজুদ্দিন স্যাররে খুব ভয় করতাম। তহন শিক্ষকরা এইট-নাইন পইরাই লেহাপড়া শিখাইছে। এহন ডিগ্রি পাস শিক্ষকরাও ভালো কইরা পড়াইতে পারে না। তহন শাসন ছিল কড়া। এহন তো শাসনের সিসটেমই নাই।

“আগে মানুষের মইধ্যে আন্তরিকতা ছিল। একের প্রতি অন্যের দরদও ছিল। এহন সেইডা লোপ পাইছে। সবাই খালি ‘ইয়ানফছি’, ‘ইয়ানফছি’ করে। তবে ভালো কিছু লোকের লাইগাই সমাজ টিকা থাকে। ভালো মানুষের সংখ্যাডাও তাই বাড়াইতে হইব।”

মেট্রিকের পরেই শহিদ উদ্দিনের ইচ্ছা কলেজে পড়ার। কিন্তু তাঁর বাবা চান সে ব্যবসা করুক। এ নিয়ে মনোমালিন্য হয়। ফলে একদিন না বলেই তিনি ঘর ছাড়েন, চলে যান কুমিল্লায়। সেখানে লোকমুখে জানতে পারেন আর্মিতে লোক নেওয়ার খবর। কৌতূহলী হয়ে যান কান্দিরপাড় রিক্রুটিং অফিসে। বাকি ইতিহাস শুনি শহিদ উদ্দিনের জবানিতে:

পাকিস্তান সেনাদের একটি গুলি মুক্তিযোদ্ধা শহিদের বুকের বাম পাশ দিয়ে ঢুকে লাং ফুটো করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়

“গিয়া দেহি দুই-তিনশ লোক লুঙ্গি কাছা দিয়া খালি গায়ে দাঁড়াইয়া আছে। অফিসের বারান্দায় আমি। কী হয় দেখতাছি। এমন সময় ক্যাপ্টেন সাব আসেন। আমারে দেইখা কন, ‘তুমি ভর্তি হইবা।’

আমি বললাম, ‘ভর্তি হইতে পারমু, স্যার।’

উত্তর শুইনা উনি আমারে শার্ট-প্যান্ট খুলতে বলেন। আমি তো শরমে মরছি। বলি, ‘স্যার, প্যান্টও খুলতে হইবো!’

কথা শুইনা তিনিও মুচকি হাসলেন। এরপর হাইট, ওয়েট আর বডি চেক কইরাই স্ট্যাম্পের কালিতে পেনসিল দিয়া বুকে নাম্বার লেইখা দিলেন। বাছাইয়ের পর দেওয়া হয় চিটাগাং ইবিআরসিতে। তের-সাত-উনিশশ চৌষট্টিতে জয়েন করছি সৈনিক পোস্টে। আর্মি নম্বর ১৩১৮৪৯৬।”

আগস্টের ৩১ তারিখে শহিদ উদ্দিনকে ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হয় পশ্চিম পাকিস্তানে, রিসালপুরে। এক বছর ট্রেনিং শেষে প্রথমে লাহোর ক্যান্টনমেন্টে এবং পরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় খ্যামকরন সেক্টরের ইঞ্জিনিয়ার কোরে। দায়িত্ব ছিল ব্রিজ ভাঙা, রাস্তাঘাট ভাঙা, মাইন লেইং অ্যান্ড লিফটিং, ওয়াটার সাপ্লাই প্রভৃতি। যুদ্ধবিরতির পর তাঁকে প্রথমে পোস্টিং দেওয়া হয় সোয়াদ গিলগেটে, ওয়ান ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটেলিয়ানে। অতঃপর তিনি কাজ করেন রাওয়ালপিন্ডিতে, ১০১ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটেলিয়ানে।

সত্তরের শেষের দিকে তিন মাসের ছুটিতে শহিদ আসেন দেশে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১। ছুটি শেষ হওয়ায় ওইদিনই তিনি রিপোর্ট করেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কুর্মিটোলা ট্রানজিট ক্যাম্পে।

দেশ তখন উত্তপ্ত, ব্যারাকের ভেতরে আপনারা কি দেখলেন?

শহিদ উদ্দিন বলেন:

“যহন পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলাম নির্বাচনে তহন বঙ্গবন্ধু পাস করছে। পাঞ্জাবি সৈনিকেরা আমগো টিটকারি দিয়া কইত, ‘শহিদ উদ্দিন, আবিতো তেরা হাতমে পাওয়ার চালা গিয়া।’

“প্রমোশনের বেলায় পাঞ্জাবিগো আগে দিত। আমগো লোকদের কম দিত। কুর্মিটোলায় ট্রানজিট ক্যাম্পে যখন ছিলাম তহন ভেতরেই দেহি কয়েকটা জায়গায় ট্রান্স করা। এক ব্যাটালিয়ানের ক্যান্টিন থেকে অন্য ব্যাটালিয়ানের ক্যান্টিনে গেলেই ওরা চেক করত। তহনই সন্দেহ করছি কিছু একটা ঘটব।”

৭ মার্চ ১৯৭১। বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিবেন রেসকোর্স ময়দানে। সিভিল ড্রেসে শহিদ উদ্দিন সহকর্মী বশিরকে নিয়ে শুনতে যান ঐতিহাসিক সে ভাষণ। এরপর কী ঘটল সে ইতিহাস জানালেন শহিদ উদ্দিন। তাঁর ভাষায়:

“শেখ সাহেবরে দেখার কৌতুহল ছিল। গিয়া দেহি লাখো মানুষ। বঙ্গবন্ধু কইলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দিব…আমি যদি হুকুম দিবার না পারি…’।

“এরপরই তো সব ওলটপালট হইতে থাকে। অসহোযোগের কারণে আমগো রেশন বন্ধ হয়। তহন রেশন আসে পশ্চিম পাকিস্তান থাইকা, কার্গো বিমানে। একদিন এয়ারপোর্টে আমগো নিয়া যায় রেশনের মাল আনতে। দেহি পাকিস্তানি সেনারা ওগো পরিবারের লোকদের বিমান ভর্তি কইরা পাঠায়া দিতাছে। সন্দেহ হইল। স্টাফরোডে মধ্যরাতে তহন ট্যাংক নিয়া ওরা ঘুরাঘুরি করত। ট্রেন বন্ধ ছিল। ১৯ মার্চ তারিখে আমরা ট্রেন পাইলাম। আমি আর বশির তহন বাড়িত চইলা আসি।”

মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন ভুইয়ার অনুকূলে সিএমএইচের ছাড়পত্র

ঢাকায় গণহত্যার খবর শহিদরা পান রেডিওতে। মনে তখন অজানা শঙ্কা। কী ঘটবে কেউ জানে না। আর্মির লোক পাইলে পাকিস্তানি সেনারা তো এমনিই মেরে ফেলবে। শহিদ ট্রেইন্ড সোলজার। চুপ করে বসে থাকতেও পারে না। তাই লড়াই-ই একমাত্র পথ। কিন্ত অস্ত্র ছাড়া লড়বে কীভাবে?

৩১ মার্চ ১৯৭১। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফোর বেঙ্গল বেরিয়ে এসে অবস্থান নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ক্যাপ্টেন আইনুদ্দিন ছিলেন দায়িত্বে। খবর পেয়ে শহিদ উদ্দিনও জয়েন করেন ওখানে। এরপরই তিনি দেশের স্বাধীনতার জন্য সন্মুখ যুদ্ধ করেন ২ নং সেক্টরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়ার বিভিন্ন স্থানে।

একটি অপারেশনের কথা জানালেন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন। তাঁর ভাষায়:

“আমরা তহন আখাউড়ায়, ফকিরমোড়া ইরাপুরে পজিশনে। পাকিস্তানি সেনাগো পুরা ব্যাটেলিয়ান ছিল পশ্চিমে। দুপুরের দিকে দেখলাম ওরা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবরটি সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে দেই মেজর আব্দুস সালেক চৌধুরির কাছে। উনি সবাইরে পজিশনে যাইতে কইলেন। নির্দেশ দিলেন উনি ফায়ার ওপেন না করা পর্যন্ত কেউ যেন ফায়ার না করে। আমি পজিশন নিছি পুস্কুনির পাড়ে।

“পাকিস্তানি সেনারা সোজা রাস্তায় ক্রলিং করে চইলা আসে রেঞ্জের ভিতরে। কিন্তু তবুও স্যার ফায়ার ওপেন করে না। চিন্তায় পইরা গেলাম! হঠাৎ ফায়ারের শব্দ। আমরাও গুলি চালাই। সামনের সারিতে থাকা পাকিস্তানি সেনারা মাডিত পইড়া যায়। তবুও ওরা কাবু হয় না। পেছন থাইকা বলে, ‘আগে বারো, আগে বারো’।

“প্রচণ্ড গোলাগুলি। এরপরই ওরা শেল মারতে থাকে। আমরা তহন টিকতে পারি না। সরে গিয়ে আশ্রয় লই ভারতের মনতলি স্কুলে। ওরা তহন আখাউড়া দখল করে। বাংলাদেশের পতাকা নামায়া পাকিস্তানি পতাকা ওড়ায়। খুব কষ্ট পাইছিলাম ওইদিন। আমগো কাছে পতাকাই ছিল সব।”

এক অপারেশনে গুলিবিদ্ধ হন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন। পাকিস্তানি সেনাদের গুলি তাঁর বুকের বাম পাশে ঢুকে লাং ফুটো করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। রক্তাক্ত ওইদিনের কথা মনে হলে আজও এ যোদ্ধার দুচোখ সিক্ত হয়।

কী ঘটেছিল ওই দিনটিতে?

খানিক নীরবতা। অতঃপর তিনি বলতে থাকেন রক্তাক্ত ওইদিনের আদ্যপান্ত:

“মনতলি স্কুল থাইকা আমাগো পাঠায় কামথানা বিওপিতে। ওখানে শালদা নদীর উত্তর পাশে পাকিস্তানিরা পজিশনে ছিল। ওগো পজিশনে অর্তকিত হামলা করতে হইব। আমি, সউদ মিয়া, হামিদ, কালামসহ ছয়জন। তিনটা দলে ভাগ হইয়া ওগো বাংকারের সামনে গিয়া মুখোমুখি ফায়ার করমু। ওরা মনে করব এনিমি সামনে আছে। তহন উত্তর দিকের রেল লাইনের নিচ দিয়া একটা কালভার্ট হইয়া আমগো আরও ৩০-৩৫ জন পেছন দিক দিয়া ওগো বাংকার চার্জ করব। সন্ধ্যায় এইডাই পরিকল্পনা হয়।

শহিদ উদ্দিন ভুইয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ

“৪ জুন ১৯৭১। রাত তহন সাড়ে ৩টা। মুখোমুখি হইয়াই আমরা ফায়ার করি। পাকিস্তানি সেনারা তহন টুইঞ্চ মর্টারের ফায়ার করে। সব গোলা গিয়া পড়ে আমগো পেছনে। প্রচণ্ড গোলাগুলি চলছে। আমি ছিলাম ধানখেতের আইলে। দুই পাশে সউদ মিয়া, আবুল কালাম আর হামিদ। পাকিস্তানিরা একটু উঁচুতে। হঠাৎ বুকে একটা ধাক্কা খাইলাম। তহনও কিছু বুঝি নাই। মনে হইছে বুকের ডান পাশে একটা গুঁতা লাগছে। ভাবছি লাঠির গুঁতা। কিছুক্ষণ পরেই আমগো লোকেরা পেছন থাইকা ওগো ওপর আক্রমণ করে। গোলাগুলি তহন শেষ। কোনো আওয়াজও নাই।

“তহন আমরা আসি গৌরাংগোলা গ্রামের মসজিদের পাশে। খালি গা। বুক দিয়া রক্ত পড়তেছিল। গাও শিরশির করছে। জোকে ধরছে নি! আঙ্গুল দিয়া ধরতেই দেহি বুকের ভিতরে আঙ্গুল ঢুইকা যায়। তহনই বুঝছি গুলি খাইছি। মনে তহন মৃত্যুভয়!

“এইহানে যদি মরি তাইলে তো ডেডবডিও কেউ পাইব না! এই ভাইবা এলএমজিডা হাতে নিয়া দৌড় দেই বর্ডারের দিকে। কিছুদূর যাওয়ার পরই চোখ ঝাপসা হইয়া আসে। একটা মাঠে পইরাই কলেমা পড়ি। মনে হইছে মারা যামু। গলা শুকাইয়া কাঠ। নিঃশ্বাসও নিতে কষ্ট হইতেছে। বুকের ওপর বাম হাতটা ছিল। সেইডা পেছনে নিতেই জমে থাকা পানির স্পর্শ পাই। ওই পানি মুখে দিতেই দমডা ফিরা আসে। আমি যে বাইচা থাকমু এইডা স্বপ্নেও ভাবি নাই ভাই। একাত্তরের পরে বোনাস লাইফ নিয়ে চলতাছি।”

চিকিৎসা নিলেন কোথায়?

“এক বাড়ির দরজার একটা পাল্লা খুইলা সহযোদ্ধারা আমারে তুইলা নেয়। গ্রামের এক ডাক্তার প্রথমে আমারে দেখে। জ্ঞান তহনও ছিল। উনি শুধু বললেন,‘আশা নাই’।

তবুও কোরামিন আর একটা ইনজেকশন দিতেই শরীরটা গরম হইল। এরপরই আমারে নেওয়া হয় আগরতলা জিবি হাসপাতালে। রক্তে হাসপাতালের ফ্লোর ভাইসা গেছিল। অপারেশন থিয়েটারে ডাক্তার রতিন দত্তর হাত ধইরা হাউমাউ কইরা কাইন্দা কইছিলাম, ‘যদি মইরা যাই তাইলে আমার ডেডবডিটা বাংলাদেশে পাঠাইয়েন স্যার।’

“উনি কিছু কইলেন না। আমার মুখের দিকে শুধু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাগো গুলিটি আমার বুকের ডান পাশ বিদ্ধ করে লাং ফুটো কইরা দেয়। অপারেশনে লাংয়ের কিছু অংশ কাইট্টা ফেলতে হয়। তহন রক্তও লাগছিল। তৎকালীন এমপিএ লুৎফুল হাই সাচ্চু আমারে রক্ত দিছে। তাঁর রক্তেই আজ বাঁইচা আছি।”

যে দেশের জন্য রক্ত দিলেন স্বপ্নের সে দেশ পেয়েছেন কি?

মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিনের উত্তর:

“পেলাম কোথায়? চাইছিলাম সুন্দর একটা দেশ। যেখানে হত্যা, রাহাজানি, অন্যায় থাকব না। খাই খাই থাকব না। কিন্তু সে দেশ তো হয় নাই। মানুষ একজনরে ভোট দিয়া চেয়ারম্যান করে। কিন্তু সে ভোটের মূল্যায়নই তো হয় না। বিচারে সে অন্যায়কে দমন করবে। এটাই তো হওয়ার কথা। আপনেরে বিচারের দায়িত্ব দিলাম। আপনি কিছু নিয়াটিয়া বিচার হালকা করে দিলেন। এইসব এহন গ্রামগঞ্জেও চলতাছে।”

কী করা দরকার?

“এক নম্বর কথা হইল সৎ থাকতে হইব। শুধু নেতাই না, সবাইকেই। আপনি অর্থলোভী হইবেন কিন্তু অন্যের সততা চাইবেন এইটা কিন্তু হইব না। ঠিকাদার উন্নয়নমূলক কাজ করে। দেখেন কত পারসেন্ট কাজ হয়। কত পারসেন্ট দিতে হয়। তাইলে ভালো কাজ হইব কেমনে? ন্যায়পরায়ণ হইতে হইবো। সঠিক বিচার করতে হইব। তা না হলে শত উন্নয়নেও দেশ এগোবে না।’

স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তান ফেরত বাঙালি সেনাদের নিয়ে সেনাবাহিনী গঠন প্রসঙ্গে এ যোদ্ধা অকপটে তুলে ধরেন নিজের মতামত:

“যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন শেখ মুজিব। পরিস্থিতিগত কারণে বাঙালি সেনারা পশ্চিম পাকিস্তানে আটকা পড়েছিল। তাই পাকিস্তান ফেরত বলেই কোনো বাঙালি সেনা দেশবিরোধী হবেন এই ভাবনাটা মোটেই ঠিক নয়। আমি মনে করি এইটা বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ছিল। বরং আগে সেনাবাহিনীতে তেমন রাজনীতি ছিল না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেনাবাহিনীতেও রাজনীতি ঢুকে গেছিল।”

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন ভুইয়া

 

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন জিয়াউর রহমান। তাঁর মন্ত্রিসভায় স্থান পায় যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকাররা। সরকারি প্রটোকল মেনে সে সময় রাজাকারদেরই স্যালুট দিতে হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিনকে। সে সময়কার কষ্টের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন:

“কষ্টের কথা বুঝাইতে পারমু না ভাই। অর্ডারের বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। তহন ভাবতাম রক্ত দিয়া কেন পতাকা আনলাম! ওগো সালাম দিতে বুকটা তো ফাইটা যাইত।”

৪৬ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা বাড়ে কেন?

মুচকি হেসে এই সূর্যসন্তান বলেন:

“দায়ী তো আমরাই। এ ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমি। যারা জীবনে কোনোদিন যুদ্ধের কথা কয় নাই এমন লোকও এহন কয় মুক্তিযুদ্ধ করছে। আমি ওগো ফরমে স্বাক্ষর দেই নাই। দেশের সাথে এমন গাদ্দারি করতে আমি পারমু না। এজন্য আমার বিরুদ্ধেই ওরা অভিযোগ দিছে। এহন অমুক্তিযোদ্ধাগো শক্তিই বেশি। সরকার কী মনে কইরা নতুন আবেদন নিতাছে, মাথায় ঢুকে না। যত সুযোগ দিবেন মুক্তিযোদ্ধাগো তালিকা তত ভুয়া হইবো। তাই এই তালিকা বন্ধ হওয়া উচিত।”

হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের চেতনা কখনও মিলবে না বলে মনে করেন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন। হেফাজতের সঙ্গে সরকারের একধরনের আপসকে তিনি রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর বলে অভিহিত করেন।

“প্রথম কইছেন, ‘তেঁতুল হুজুর’, ‘তেঁতুল হুজুর’। এহন মিল্লা যাইয়া কন, ‘মিষ্টি হুজুর’, ‘মিষ্টি হুজুর’। তাইলে তো হইব না। তেঁতুল হুজুররা সঙ্গে থাকলে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হইব না। প্রকাশ্য শক্রও ভালো। সর্তক হওয়া যায়। কিন্তু ওরা তো ভেতরে ঢুইকা সুযোগ পাইলেই ইঁন্দুরের মতো কাটব। তাই হুজুরগো ওপর নির্ভরশীলতা আমগো কমাইতে হইব।’

দেশ কেমন চলছে?

“শেখের মাইয়া ভালো উন্নতি করছে। আগে তো বিদুৎ পাইতাম না। এহন ঘরে ঘরে বিদুৎ। রাস্তাঘাটগুলা পাকা হইছে। যোগাযোগব্যবস্থাও উন্নত। কিন্তু ঘরে ঘরে মাদক ঢুকে গেছে। মদ, গাঁজা, ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছে যুবকরা। মাদকের বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর সিদ্ধান্ত নিলে দেশ আরও এগোবে।”

শত সমস্যা কাটিয়ে নতুন প্রজন্মের হাত ধরেই এদেশ একদিন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হবে– এমনটাই বিশ্বাস যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক শহিদ উদ্দিন ভুইয়ার। পাহাড়সম আশা নিয়ে তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন:

“দেশপ্রেম মানুষের শক্তি। পতাকা তোমার পরিচয়। তোমার পরিচয়টাই তুমি সবার ওপরে তুলে ধরো। মাদক থেকে দূরে থেক। মনে রেখ তোমার ভবিষ্যৎ নষ্ট করতেই মাদকের সৃষ্টি।”

 

সংক্ষিপ্ত তথ্য:

নাম : যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক শহিদ উদ্দিন ভুইয়া
ছিলেন: সেনাবাহিনীর সৈনিক। আর্মি নম্বর ১৩১৮৪৯৬

যুদ্ধ করেন: ২ নং সেক্টরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়ার বিভিন্ন স্থানে
যুদ্ধাহত: ৪ জুন ১৯৭১। শালদা নদীর উত্তর পাশ থেকে আসা পাকিস্তানি সেনাদের একটি গুলি তাঁর বুকের বাম পাশ দিয়ে ঢুকে লাং ফুটো করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

ছবি ও ভিডিও: লেখক

 

লেখক পরিচিতি:

Author

: লেখক, গবেষক, প্রকাশিত: বিডিনিউজ২৪ডটকম

আমাদের বেশীরভাগ লোকের জন্য যে কোন মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখা একটি মানসিক আঘাতের কারন হতে পারে। কিন্তু অনেক দিন ধরে এমন পরিস্থিতির মধ্যে থাকলে তখন এটা খুব স্বাভাবিকই মনে হবে। এমনই অনুভুতি হয়েছে সুদানিজ রিটারনির ব্লগের লেখকের ক্ষেত্রে বেশ কয়েক বছর ইউরোপে থেকে উত্তর সুদানের জুবাতে ফিরে আসার পর। এই অন্চলে দুই দশক ধরে রক্তাক্ত যুদ্ধ হচ্ছে।

বহুদিন ধরে আমি বুঝতে পারতাম না যে আমার কেন মনে হয় যে আমি কম বয়সে মারা যাব। ইউরোপে মানুষ আবহাওয়া নিয়ে যে ভাবে কথা বলে জুবাতে মানুষ দুর্ঘটনা আর মৃত্যু নিয়ে সেই ভাবে কথা বলে।

জুবাতে আসার ২ দিন পরে একটি ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। আমি বাসার বাইরে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে বসে ছিলাম… এর পরে একটা চিৎকার… মনে হলো কেঊ ব্যথা পেয়েছে, ভয় আর বিশৃঙ্খলার মধ্যে আছে।

একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে…তার মাথা চুর্নবিচুর্ণ হয়ে গেছে….মনে হয় সে আঘাত পাবার সাথে সাথে মারা গেছে। তারপর শুনলাম যে আর একজন মারা গেছে…।

পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল যে সে মারা গেছে, কিন্তু তারপরেও কিছু লোক তার নাড়ী দেখার চেষ্টা করে ঘোষনা করলো যে সে মারা গেছে। তারা একই মার সন্তান!

ধীরে ধীরে ভিড় কমে গেল…কারন তাদের জন্য এটি জুবার আর একটি সাধারন দিন। এই মৃতের মা আর আমার জন্য এটি একটা দিন যা আমরা কখনো ভুলবোনা।

সুদানিজ রিটারনির শরীর খারাপ লাগছিল। সে ডা. কোনিয়োকোনিয়োকে তার ক্লিনিকে খুজে পায়নি। তার কারন হয়তবা ডা কোনিয়োকোনিয়ো উত্তর সুদানে স্বাস্থ্য বিষয়কে গুরুত্ব দেয়ার ব্যাপারে একটা ব্লগ লিখছিলেনঃ

আপনি কেমন করে বেছে নেবেন কোন সমস্যাটা নিয়ে আগে কাজ করবেন? যখন সুদানের সরকার আসলো তারা অনেক জিনিষ ঠিক করার কথা দিয়েছিল যেমন হাসপাতাল, ক্লিনিক আর স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি; পুরানো হাসপাতাল ঠিক করা হবে আর সব জায়গায় স্বাস্থ্য জরীপ করা হয়েছিল। তারপর কি হলো?

এটি দু:খজনক যে বেশীরভাগ কথা কাজে পরিণত হয়নি… স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আমাদের বেশী গুরুত্ব দেয়া উচিত।

দ্রিমা, দা সুদানিজ থিঙ্কার ব্লগ জানিয়েছে কি করে একটা শিশুকে ব্যর্থ একটি হত্যা পরিকল্পনায় ব্যবহার করা হয়েছেঃ

সাক্ষীরা বলল যে একজন অজ্ঞাত লোক একটা বাচ্চার হাতে বিষ্ফোরক দিয়ে তাকে মঞ্চে যেখানে কোদি ছিল সেখানে যেতে বলে। কিন্তু বাচ্চাটা মঞ্চে যাওয়ার আগে বিষ্ফোরকটি ফেটে যায়।

সে ওমর আল-বাশির যে ইটালিতে পোপের সাথে দেখা করেছে তার ছবিও পাঠিয়েছে!!

লিটল মিস ডালু নারীদের খৎনা করাকে যৌন হয়রানির সাথে তুলনা করে তার চিন্তা ব্যাখ্যা করেছেন:

আমি এই লেখার নাম “যৌন হয়রানি হিসাবে এফজিএম (ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন)” লিখেছি কারন আমি মনে করি মহিলাদের যৌনাংগের কিয়দংশ কাটা তাদের উপর একধরনের নির্যাতন। এই কাজের মাধ্যমে তাদেরকে শ্রেনীভুক্ত করা হয়, তার শরীরে হাত দেয়া হয় আর তার যৌনতা লঙ্ঘন করা হয় (তার দেহ থেকে অপ্রয়োজনীয় মনে করা একটা অংশকে বাদ দিয়ে)। তার শরীরকে আর একজনের আনন্দের জন্য ঠিক করা হয়। এটা আসলে নিয়ন্ত্রন যা সতীত্বের নামে করা হচ্ছে।

হোলহার্টেডলি সুদানিয়া জিজ্ঞেস করেছেন, ”দারফুরঃ কে শান্তি চায়?

… সুদানের দারফুরের আফ্রিকান ইউনিয়নের আর্মী বেইজে বিদ্রোহীদের আক্রমনে ১০ জন শান্তিরক্ষা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছে যার ফলে আন্তর্জাতিক নিন্দার ঝড় উঠেছে। (উৎস)

আমি ভাবছি দারফুরবাসি এ ব্যাপারে কি ভাবছে, ”এই যে আবার শুরু হলো…স্বার্থপর বোকারা শান্তি প্রক্রিয়াটা যে কোন মূল্যে থামাতে চায়।”

খার্তুমে এসপিএলএম দলের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক অভিযানের ব্যপারে দ্যা সুদানিজ আমেরিকান মন্তব্য করেছেন:

এই ধরনের কাজের কারনে সুদানকে একত্রে রাখা কষ্টকর। এটির ফলে ভুল ইঙ্গিত যায় শুধুমাত্র উত্তর সুদানবাসীর কাছে না, দক্ষিনবাসীদের কাছেও। দুই বছরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন হচ্ছে, আশা আছে যে যুক্ত সরকার গনতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবে আর ক্ষমতাশীল জাতীয় কংগ্রেস দল নির্বাচনের ফলাফল গ্রহন করবে, কিন্তু এখন মনে হয় এরকম কিছু হবেনা।

শেষে আমি আপনাদের কাছে পাথ২হোপের “নিউ বিগিনিং” নামক লেখা থেকে উদ্ধৃত করছিঃ

আমি ইংল্যান্ডে এসেছি আর খুশি যে আবহাওয়া ভালো, চারদিক ধুসর আর বাতাস বইছে একটু বৃষ্টিসহ যেমন আমি আশা করেছি।

… কালকে ট্রেনে করে আমি ইউনিভার্সিটি যাব, জানিনা কি আশা করছি, কিন্তু নিশ্চয় ভালো কিছু, আমাকে শুভেচ্ছা জানাবেন।

সুদানে নিশ্চয়ই কোথাও ভালো কিছু হচ্ছে, কিন্তু তার থেকে বেশী খারাপ জিনিষ হচ্ছে। সুদানিদের নতুন একটা শুরু দরকার।

সুদানীজ দ্রিমা

অনুবাদ প্রকাশের তারিখ 17 অক্টোবর 2007

 

Yameen Rasheed was found in his apartment with multiple stab wounds to his neck and chest.

NDTV: A liberal blogger, Yameen Rasheed, was stabbed to death in the politically restive Maldivian capital Male, his family members and colleagues said Sunday. He was 29.

Mr Rasheed was found in the stairwell of his apartment with multiple stab wounds to his neck and chest early Sunday and died shortly after being taken to hospital, family members said.

His blog, The Daily Panic, had a considerable following and was known for poking fun at politicians in the nation.

“With The Daily Panic, I hope to cover and comment upon the news, satirise the frequently unsatirisable politics of Maldives,” he wrote on his blog.

Mr Rasheed is the third media personality to be targeted in the Maldives in the past five years. Blogger Ismail Rasheed, also known as Hilath, was stabbed and wounded by an unidentified attacker in 2012.

A journalist with the independent Minivan News, Ahmed Rilwan, was likely abducted in August 2014 and has been missing ever since.

Exiled opposition leader and former president Mohamed Nasheed on Sunday demanded action on the latest killing of an independent journalist.

“President Nasheed is demanding an inquiry with international participation so it can’t be swept under the carpet as usual,” a spokesman for Mr Nasheed told news agency AFP.
Political tension has mounted in the Maldives after a failed bid by the opposition to impeach the country’s parliamentary speaker late last month.

The regime of President Abdulla Yameen has arrested the last Maldives opposition leader not to be in jail or in exile as part of a major government crackdown on rival politicians, who narrowly failed to seize control of parliament.

Qasim Ibrahim, who ran for president in 2013 and currently heads the Jumhooree Party (JP), was one of four signatories of an opposition unity deal aimed at toppling Yameen.

Mr Ibrahim was briefly detained and released earlier this month only to be re-arrested over the weekend.

A coalition of opposition parties, led by exiled leader Mr Nasheed, is trying to undermine Yameen before elections next year.

It faces an uphill struggle, with all opposition leaders now in exile or in jail after a years-long crackdown on dissent under Mr Yameen’s leadership.

The clampdown has raised fears over the country’s stability and dented its image as a tourist paradise

 

প্রকাশিত: প্রথম আলো, ১৯ এপ্রিল ২০১৪

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন,

‘আমরা তোমাদের প্রধানমন্ত্রীকে গালি দিই নাই, শুধু শুধু আমাদের দিকে চোখ বড় করে তাকাও কেন? নাস্তিকরা তোমরা মুরতাদ হয়ে গেছ, তোমাদের কতল (হত্যা) করা আমাদের ওপর ওয়াজিব হয়ে গেছে।’

আল্লামা শফী আরও বলেন,

‘হেফাজতে ইসলাম কাউকে গদিতে বসাতে-নামাতে আন্দোলনে নামে নাই। আমরা আন্দোলন করছি ১৩ দফা মানার জন্য। সরকার, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নাই। তারা মুসলমান হলে আমাদের ১৩ দফা মেনে নেবে। ১৩ দফা মানলে ভালো, না মানলে নাই।’

গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটায় কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র আলহাজ কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের হকার-ব্যবসায়ী আয়োজিত ইসলামি মহাসম্মেলনে আল্লামা শফী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

আল্লামা শফী বলেন,

‘তারা কোথায় কী স্বপ্ন দেখেছে, কওমি মাদ্রাসার মধ্যে জঙ্গি আছে। স্কুল-কলেজে তো দুই দল মারামারি-গোলাগুলি করে, জঙ্গি বললে তাদেরই বলতে হবে। বাংলাদেশের কোনো মাদ্রাসার মধ্যে দুই দল মারামারি-গোলাগুলি করেছে, এ রকম প্রমাণ দিতে পারলে আমি তাদের পুরস্কৃত করব।’ তিনি বলেন, ‘নাস্তিকদের গালি দিলে কারও গায়ে লাগলে আমার করার কিছু নাই। আল্লাহর দেশে থাকতে হলে আল্লাহকে না দেখে আল্লাহর অস্তিত্ব মানতে হবে, না হলে তুমি আল্লাহর দেশে থাকতে পারবে না।’

ইসলামি মহাসম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন পেকুয়া আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা জালাল আহমদ।